সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গোখরো সাপকে মাটির হাঁড়ির মধ্যে প্রায় চারদিন আটকে রেখে পূজাচর্না চলছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের গ্রামে। আর সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন শয়ে-শয়ে মানুষ। মহিলা পূজারি বলছেন, এই বিষধর এসেছে কৈলাস থেকে। অভিযোগ, এমন কুসংস্কারের পরেও ওই বন্যপ্রাণকে বাঁচাতে যেমন আসেনি বনদপ্তর। তেমনই উদাসীন প্রশাসনও। দেখা নেই বিজ্ঞানমনস্ক সংগঠনগুলিরও। তবে কংসাবতী দক্ষিণ বিভাগের ডিএফও অসিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এখনই ঘটনাটি দেখা হচ্ছে। সাপটিকে এভাবে আটকে রাখা যায় না।” এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে পুরুলিয়া-বাঁকুড়ায় বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করা একাধিক সংগঠন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কংসাবতী দক্ষিণ বিভাগের বান্দোয়ান এক বনাঞ্চলের ঘুসিকডি গ্রামে গত চারদিন ধরে সাপকে আটকে রেখে এমন কুসংস্কার চলছে। ওই গ্রামের এক দম্পতি এই সাপকে আটকে রেখে পূজাচর্না করছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের বাড়িতে একটি শিবমন্দিরে হাঁড়ির মধ্যে ওই গোখরো সাপকে রেখে এই কারবার চলছে। হাঁড়ি নিচু করে সেই গোখরো সাপ দেখাচ্ছে ওই দম্পতি।
[ খাবারের লোভ দেখিয়ে প্রতিবেশী ২ শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহ, গ্রেপ্তার প্রৌঢ় ]
পুজো দিতে শুধু ওই এলাকার মানুষ নন, আশেপাশের গ্রাম-সহ ঝাড়খণ্ড থেকেও এখানে পুজো দিতে আসছেন। ওই মহিলা বলছেন, “এই গোখরো সাপটি চার-পাঁচ বছর ধরে আমার বাড়িতে আসা-যাওয়া করছে। তখন শুধু আমাকেই দেখা দিত। এই সাপটি যাতে সকলে দেখতে পারেন তার জন্যই হাঁড়ির মধ্যে রেখেছি। এই সাপটি কৈলাস থেকে এখানে এসেছে। মহাদেব আমাকে স্বপ্নে পুজো করতে বলেছেন।”
এই গোখরো দর্শন করে শুধু পূজাচর্না নয় রোগ মুক্ত হওয়ার জন্য বহু মানুষ এখানে ভিড় জমাচ্ছেন। বান্দোয়ান এক বনাঞ্চলের আধিকারিক লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। একটি কর্মসূচিতে বড়বাজারে এসেছিলাম। গোটা ব্যাপারটি দেখছি।” এদিকে বন্যপ্রাণ সংগঠনগুলি বনদপ্তরের এমন উদাসীনতায় তাদের কাঠগড়ায় তুলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, বনদপ্তরের কাজ কর্ম নিয়ে। অভিযোগ, একটা সাপ চারদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তর শুধু দেখছি-দেখব বলছে বলে অভিযোগ। পুরুলিয়া-বাঁকুড়ায় বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করা অনির্বাণ পাত্র জানিয়েছেন, ভারতীয় বন্যপ্রাণ আইন অনুযায়ী এই কাজ অপরাধ। এইভাবে গোখরো সাপ আটকে রাখা যায় না।
[ মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি থামিয়ে চালককে শাসানি! বিতর্কে টিএমসিপি নেত্রী জয়া দত্ত ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.