সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতকাল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে বদলি করে পাঠানো হয় উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ হাসপাতালে। আর কাকদ্বীপের মানুষই গ্রহণ করতে রাজি নয় সন্দীপ ঘোষ ‘ঘনিষ্ঠ’ এই চিকিৎসককে। তাই বিরূপাক্ষের বদলির খবর প্রকাশ্যে আসতেই প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে জমায়েত করেন এলাকার বাসিন্দারা। শুরু হয় বিক্ষোভ। আজও গোটা কাকদ্বীপজুড়ে দফায় দফায় চলছে প্রতিবাদ। ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভের আঁচ। সকলের দাবি একটাই, ‘কাকদ্বীপ হাসপাতালে বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের(Birupaksha Biswas) বদলির সিদ্ধান্ত মানছি না মানব না।’
ভাইরাল ‘হুমকি’র অডিওকে কেন্দ্র করে চর্চায় এসেছিলেন বর্ধমান মেডিক্যালের প্যাথোলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, ৯ আগস্ট সকালে নাকি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সেমিনার হলে উপস্থিত ছিলেন তিনি। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। শোনা যায়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজেও নাকি চলত তাঁর ‘দাদাগিরি’, ‘থ্রেট কালচার’। বিতর্কে নাম জড়ানো চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার পদক্ষেপ করে স্বাস্থ্যদপ্তর। অবশেষে তাঁকে বদলি করে পাঠানো হয় কাকদ্বীপ হাসপাতালে। তার পর থেকে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। সন্দীপ ‘ঘনিষ্ঠ’ এই চিকিৎসকের বদলির প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কাকদ্বীপের নাগরিক সমাজ।
আজ সকাল থেকেই থমথমে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতাল চত্বর। হাসপাতালের মূল গেট থেকে শুরু করে কাকদ্বীপ শহরের বাড়ির দেওয়াল, বিভিন্ন দোকানের দেওয়াল জুড়ে নজরে পড়ছে একটাই পোস্টার। ‘কাকদ্বীপ হাসপাতালে বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বদলির সিদ্ধান্ত মানছি না মানব না।’ আবার কোথাও লেখা রয়েছে, ‘কাকদ্বীপবাসী দিচ্ছে ডাক বিরূপাক্ষ নিপাত যাক।’ ইতিমধ্যে কাকদ্বীপ হাসপাতালের মূল গেটের সামনে সিপিআইএমের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচি। বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে চলছে স্লোগানিং।
এদিকে, বিরূপাক্ষের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। এবার তাঁর নাম জড়িয়েছে ক্যান্টিন দুর্নীতিতে। যেখানে বিরূপাক্ষের দোসর থ্রেট সিন্ডিকেটের পাণ্ডা চিকিৎসক অভীক দে-ও। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিনে খাবার খেয়ে বিল না মেটাটেন তাঁরা। ক্যান্টিনে দুজনের মিলিত বকেয়া প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আবার বিশাল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে আরও একটা ক্যান্টিন চালু করার মতো ঘটনাও সামনে আসতে শুরু করেছে। বুধবার এনিয়ে মুখ খুলেছেন চিকিৎসক, পিজিটি, জুনিয়র ডাক্তাররা। বিশাল অঙ্কের বকেয়া থাকায় সমস্যায় পড়া ক্যান্টিন মালিকও সরব হয়েছেন এই নিয়ে।
এক পিজিটি বলেন, “থ্রেট কালচারের হোতা এই অভীক-বিরূপাক্ষরা। দুর্নীতিতে এতটাই ডুবেছে যে সামান্য ক্যান্টিনের বিলটাও মেরে দিতে চাইছে। টাকার লোভ, ক্ষমতার দম্ভ তাদের কোথায় নিয়ে গিয়েছে। অভীক-বিরূপাক্ষদের সব মিলিয়ে ৫০ হাজার টাকার বিল বাকি রেখেছে ক্যান্টিনে।”মেডিক্যাল কলেজের আরও একটি ক্যান্টিন চালু হয়েছিল পিজিটি হস্টেলের নীচে। সেই ক্যান্টিন বেআইনিভাবে করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তার, পিজিটিরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.