ছবি: প্রতীকী
দেবব্রত দাস, খাতড়া: বৈধ সরকারি চালান থাকা সত্ত্বেও বালির গাড়ি আটকে চালকের কাছ থেকে চাবি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ। কাঠগড়ায় বাঁকুড়ার (Bankura) সিমলাপালের বিডিও। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। সিমলাপালের বিডিও অরিজিৎ দাসের গাড়ি আটকে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে উত্তেজিত জনতা। ঘণ্টাদুয়েক পর ঘেরাও মুক্ত হন সিমলাপালের বিডিও।
সিমলাপালের মণ্ডলগ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মণপুর এলাকায় শিলাবতী নদীতে সরকারিভাবে বৈধ বালি খাদান রয়েছে। ই-চালানের মাধ্যমে এই নদীঘাট থেকে বালি উত্তোলন করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সিমলাপালের বিডিও অরিজিৎ দাস লক্ষ্মণপুর মোড়ের কাছে রাস্তায় বালি ভরতি গাড়ি আটকান। এরপর আরও চারটি বালি বোঝাই গাড়ি আটকান। গাড়ি চালকদের অভিযোগ, বালি পরিবহণের জন্য সরকারি ই-চালান ছিল। বিডিও সেই চালান দেখেন। তারপর গাড়ির কাগজপত্র দেখার নাম করে গাড়ির চাবি কেড়ে নেন। কোনওরকম প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই গাড়িগুলিকে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।
এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গাড়ির চালক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বিডিও-র গাড়ি আটকে তারা বিক্ষোভ দেখান। বিডিওকে ঘিরে ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু হয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে গাড়িগুলিকে ছেড়ে দিতে রাজি হন বিডিও। কিন্তু গাড়ি চালকরা জেদ ধরেন যে, দীর্ঘ সময় গাড়িগুলিকে আটকে রাখার কারণ লিখে ই-চালানে বিডিওকে স্বাক্ষর করতে হবে। অবশেষে বিডিও চালানে স্বাক্ষর করার পরেই তিনি ঘেরাও মুক্ত হন। সিমলাপালের বিডিও-র এই কাজে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তালডাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। রবিবার অরূপবাবু বলেন, “সরকারিভাবে ই-চালান নিয়ে নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে বালি পরিবহণ করছেন গাড়ি চালকরা। সিমলাপালের বিডিওর কোনও এক্তিয়ারই নেই গাড়ি আটক করে কাগজপত্র দেখার। এই কাজ করার জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর ও পুলিশ রয়েছে। সিমলাপালের বিডিও নিশ্চয় কোনও স্বার্থে একাই বালি গাড়ি আটক করতে গিয়েছিলেন। এরফলে ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারত। তখন তো বিডিও দায়ী হতেন। বিডিওর এমন অনৈতিক কাজের আমি প্রতিবাদ করছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”
খাতড়ার মহকুমাশাসক মৈত্রী চক্রবর্তী বলেন, “বিডিও আমাকে কিছুই জানাননি। বালি খাদান থেকে ই-চালানের মাধ্যমে বৈধভাবে বালি পরিবহণ চলছে। বিডিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” যদিও এবিষয়ে বিডিও জানান, সরকারিভাবে দায়িত্ব পালন করতেই বালি খাদানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে কারবারিদের হাতে ঘেরা হন। তাঁর কথায়, “গাড়ির কাগজপত্র, চালকদের লাইসেন্স ছিল না। তাই গাড়ি আটক করেছিলাম। কোনও অনৈতিক কাজ করিনি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.