সুমন করাতি, হুগলি: নাবালিকাকে বাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা। বাধা পেয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা। মারা গিয়েছে ভেবে তাকে হাইড্রেনে ফেলে চলে যায় অভিযুক্ত। দুদিন পর স্থানীয়রা ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করেছিল। ২০২১ সালের ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় অভিযুক্ত পার্থ চৌধুরীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আজ ওই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সাজা শোনাল চন্দননগর আদালত।
আরজি কর কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় ছিল রাজ্য রাজনীতি। সেই আবহে জয়নগর, মুর্শিদাবাদে ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত সাজা শোনানো হল। দুই মাসের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে সাজা ঘোষণা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির পক্ষে বক্তব্য রাখেন। গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই নারী নির্যাতন রুখতে অপরাজিতা বিল তৈরি হয়েছে। এখন তা আইন হওয়ার অপেক্ষায়। নারী নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশও শক্ত হাতে তদন্ত করছে। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযুক্তদের। দ্রুত বিচার প্রক্তিয়াও হচ্ছে। সেই তালিকায় এবার জুড়ল চন্দননগরের ঘটনা। ধর্ষণের চেষ্টা, খুনের চেষ্টার মামলায় তিন বছরের মধ্যে সাজা শোনাল আদালত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকা পার্থ চৌধুরীর পূর্ব পরিচিত। অভিযোগ, বিবাহিত পার্থ ওই নাবালিকাকে তার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির জন্য মাঝেমধ্যেই চাপ দিত। নাবালিকাকে প্রায়শই উত্যক্ত করত সে। ২০২১ সালের ১৫ জুন মোবাইল রিচার্জ করতে বেরিয়েছিল বছর পনেরোর নাবালিকা। সেইসময় পার্থ তাকে জোর করে বাইকে তুলে নিয়ে যায়। চন্দননগরের বিলকুলি নামক এলাকার নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বাধা দিলে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করে। ঘটনায় নাবালিকা অচৈতন্য হয়ে পড়ে। ওই নাবালিকা মারা গিয়েছে, এমনই অনুমান করে সে। ওই নাবালিকাকে তুলে একটি নর্দমায় ফেলে রেখে পালায় ওই ব্যক্তি। মেয়ে বাড়ি ফিরছে না দেখে খোঁজ শুরু করেন পরিবারের লোকজন।
ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর ওই নাবালিকাকে জখম অবস্থায় ওই নর্দমা থেকেই উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে খানিক সুস্থ হলে ওই নাবালিকা গোটা ঘটনার কথা পুলিশকে জানায়। তল্লাশি অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পার্থ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা, খুনের চেষ্টা, অপহরণের মতো ধারায় মামলা রুজু হয়। চন্দননগর আদালতে অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন জাজ মানবেন্দ্র সরকারের এজলাসে চলে মামলার শুনানি। তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আজ দোষী ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.