স্টাফ রিপোর্টার: সারদা ইস্যু নিয়ে এবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) মুখোমুখি প্রকাশ্য বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। শুধু তাই নয়, কুণালের ঘোষণা, কলকাতা প্রেস ক্লাবের মতো কোনও জায়গায় ওই বিতর্ক হোক সমস্ত টিভি চ্যানেল ও সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতে।
বুধবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, ‘‘যখনই কোনও রাজনৈতিক ইস্যুতে বিপাকে পড়ে উত্তর খুঁজে পায় না শুভেন্দু অধিকারী আর ঠিক তখনই সারদা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য হাজির করে পালিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে তখন আমায়ও পালটা উত্তর দিতে হয়। এত কিছু বলার বা জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নেই, শুধু সারদা নিয়ে একদিন খোলাখুলি, মুখোমুখি বিতর্কে বসতে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি শুভেন্দু অধিকারীকে। কেন আর পিছনে এত নানা মন্তব্য করবেন, টিপ্পনি কাটবেন। সামনাসামনি বসে কথা হোক। আর এই বিতর্কটা টিভি চ্যানেলে লাইভ টেলিকাস্ট হোক।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলের কাজে ‘সহযোগিতা’ করতে তৃণমূল মুখপাত্রকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়ার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ইডি’র (ED) টাকা ফেরত দেওয়ার তথ্য তুলে তুলে কুণালকে চোর বলে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা। আর এই প্রসঙ্গে পালটা জবাব দিতে গিয়ে এদিন কুণাল বলেন, ‘‘ইডিকে টাকা ফেরত দেওয়ায় আমি যদি ওর বিচারে দোষী হই তা হলে তো মিঠুন চক্রবর্তীও চোর। কারণ, মিঠুনও তো ইডির মাধ্যমে সারদার টাকা ফেরত দিয়েছেন। তা হলে তো মিঠুনকেও চোর বললেন বিরোধী দলনেতা।’’ উল্লেখ, ইডি কোর্টেও জানিয়েছিল কুণাল ঘোষ, ইডিকে টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। এদিন তৃণমূল মুখপাত্র জানান, মামলা শেষ হলেই আমি আমার ন্যায্য পারিশ্রমিকের টাকা ফেরত চেয়ে আদালতে পিটিশন করব।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেস পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলের কাজে সহযোগিতা করার জন্য বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে কুণাল ঘোষকে। আর প্রথম দিনেই নন্দীগ্রামে বিজেপির (BJP) ঘরে ধস নামিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র। যারা গত বিধানসভা ভোটে শুভেন্দুর নির্বাচনী স্তম্ভ ছিল, সেই বটকৃষ্ণ দাস ও জয়দেব দাসদের কার্যত তৃণমূলে (TMC) ফেরার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন তিনি। বস্তুত এর পরই জেলায় কুণালের পা রাখা নিয়ে কার্যত প্রমাদ গুনে কুরুচিকর আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা। কুণালকে জড়িয়ে সারদা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু।
বিষয়টি নিয়ে এদিন কুণাল পালটা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ‘‘আমি পেশাদারি হিসাবে সারদা থেকে মাইনে পেয়েছি। আয়কর রিটার্ন দিয়েছি। আমি মামলা জিতে টাকা ফেরত নেব। আমি বিজ্ঞাপনের টাকাও ফেরত দিয়েছি। আমি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে কাজ করেছি, পারিশ্রমিক হিসাবে টাকা নিয়েছি। আর সুদীপ্ত সেনের চিঠিতেই উল্লেখ আছে, সারদা থেকে দফায় দফায় কোটি কোটি টাকা তোলাবাজি নিয়েছে শুভেন্দু। শুধু তাই নয়, নারদাতেও দেখা গিয়েছে তোয়ালে মুড়ে টাকা নিতে। ও একটা পাক্কা চিটিংবাজ, তোলাবাজ।’’
এরপরই তৃণমূল মুখপাত্র দাবি করেন, এক নারদার ভিডিওতে শীর্ষক ট্রেলারে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারী কীভাবে গোছা গোছা টাকা তোলা তোলেন, তাহলে ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়’।
সারদার টাকা ফেরত নিয়ে শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এদিন কুণাল বলেন, সুদীপ্ত সেনের (Sudipta Sen) চিঠিতে কী লেখা আছে, তা শুভেন্দু যেমন জানে, আমিও জানি। ওর ভাই-পরিবার কত টাকা সারদা থেকে নিয়েছে, সেটাও ওর জানা আছে। আমি বেতন ও বিজ্ঞাপনে কত টাকা নিয়েছি, তা কোর্টে ইডি জানিয়ে দিয়েছে। বাংলায় বহু সংবাদমাধ্যম সারদা থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ টাকা নিয়েছে। আমিই একমাত্র ওই টাকা ইডি মারফত ফেরত দিয়েছি। তাই আমার বিতর্কে বসা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কুণালের স্পষ্ট ঘোষণা, আমি জ্ঞানত কোনও অপরাধ করিনি। তাই সারদা নিয়ে মুখোমুখি ওর (শুভেন্দু) সঙ্গে বিতর্কে বসতে সমস্যা নেই। ওর বুকের পাটা থাকলে পিছনে না বলে সামনাসামনি বসুক। যে কোনও সময়ে শুধু সারদা (Saradha) ইস্যু নিয়ে সবার সামনে বিতর্কে বসতে প্রস্তুত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.