নন্দন দত্ত, বীরভূম: তিন বছরের বন্দিদশা কাটিয়ে এবার পুজো আর বিজয়ায় সম্মিলনীতে উপস্থিতি অনুব্রত মণ্ডলের। বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলা তৃণমূলের তরফে মুরারইতে ছিল বিজয়া সম্মিলনী। সেখানে যোগ দিয়ে ছাব্বিশের নির্বাচনের বার্তা দিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা উপড়ে ফেলে একসঙ্গে সকলকে লড়াই করতে হবে, এমনই বললেন অনুব্রত। পাশাপাশি, তাঁর সাফ বক্তব্য, ”নেতা নই কেউ, নেতা একজনই – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবাই কর্মী হয়ে লড়ব।”
গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে এতদিন দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। পুজোর আগেই জামিনে মুক্ত হয়ে ফিরেছেন জেলায়। বীরভূমের নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামে নিজের পৈতৃক বাড়িতে দুর্গাপুজোয় হাজির ছিলেন তিনি। এর পর বৃহস্পতিবার তিনি মুরারইয়ের বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দিলেন। সঙ্গে জেলার সব দলীয় বিধায়ক। মঞ্চে তাঁকে বিশাল মালা দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর পর নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত বলেন, ”সকলকে বিজয়ার শুভেচ্ছা। বড়দের প্রণাম আর ছোটদের স্নেহ, ভালোবাসা। আমি সকলকে বলতে চাই, কেউ কারও সঙ্গে ঝগড়া করবেন না। কী হবে ঝগড়া করে? কার জন্যই বা করবেন? আমার জন্য করবেন? কোনও দরকার নেই। সবাই মিলেমিশে থাকলে ভালো হবে সব।”
অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে জেলা সংগঠনের দায়িত্ব ৬ সদস্যের কোর কমিটিকে দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে প্রথমে অনুব্রত-বিরোধী বলে পরিচিত কাজল শেখ তেমন গুরুত্ব না পেলেও পরে জেলার একাংশে সংগঠনের ভার তাঁর উপর দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে একটি সমান্তরাল গোষ্ঠীর অস্তিত্বও জানান দিচ্ছিল। এখন জেলমুক্তি হয়েছে অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর জেলা সভাপতি পদে নির্দিষ্টভাবে কাউকে না আনা হলেও, আনুষ্ঠানিকভাবে সেই পদেও ফেরানো হয়নি। তাতেই মনে করা হচ্ছে, অনুব্রত যেমন সংগঠন চালাচ্ছিলেন, তেমনই চালাবেন। বাড়তি কোনও দায়িত্ব নেই আর। তা বুঝে অনুব্রত নিজেই বার্তা দিলেন, কোনও দ্বন্দ্বে জড়ানো নয়, সকলে মিলেমিশে কর্মী হয়ে লড়াই করতে হবে। ঘুচিয়ে দিতে চাইলেন নেতা আর কর্মীর বিভেদ। তাঁর আবেদন, মা-বোনেরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুহাত ভরে ভোট দিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.