সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: প্রথম দফার বর্ষা ঢুকে গিয়েছে অনেকদিন। অতি বর্ষণে প্রায় বন্যা পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গে। শিলিগুড়ি থেকে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার অতি বর্ষণের সবরকম কুপ্রভাবের শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু এর মাঝেও ব্যতিক্রম ইলিশ। যে কারণে বর্ষার আশায় গোটা বছর বসে থাকেন আম বাঙালি, আষাঢ় শেষে শ্রাবণ পড়ে গেলেও, শিলিগুড়ির বাজারে সেই টাটকা ইলিশের দেখা নেই। ফলে হতাশা বাড়ছে মৎস্যপ্রেমী বাঙালির৷
উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় নিয়ন্ত্রিত বাজার শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেটে এখন যা বিক্রি হচ্ছে, তা হিমঘরের ইলিশ। ফলে যা হওয়ার তাই। বরফে রাখা ইলিশের তেমন স্বাদ কই? পদ্মার ইলিশ তো দূর অস্ত, অন্তত ডায়মন্ড হারবার কিংবা পুরীর ইলিশও যদি পাতে পড়ত, তাহলেও রসনাবিলাস কিছুটা তৃপ্ত হত শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার বা কোচবিহারের বাসিন্দাদের। কিন্তু কবে সেই টাটকা ইলিশ পাতে পড়বে, সেই আশ্বাস দিতে পারছেন না আমদানিকারকরাও৷ আশার আলো দেখাতে পারছেন না ইলিশ ব্যবসায়ী মহলও।
শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেট ফিশ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বাপি চৌধুরি জানালেন, এবছর এখনও পর্যন্ত টাটকা ইলিশ ঢোকেনি বাজারে। জুনের মাঝামাঝি প্রতি বছর যা ঢুকে পড়ে। অগাস্ট মাস পর্যন্ত যা নিয়মিত আমদানি হয়। কিন্তু এবার জুলাইয়ের শেষভাগেও মাছ ঢোকেনি। বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবির পর নতুন করে সমুদ্রে ট্রলার পাঠানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে ইলিশ ধরাতে। ডায়মন্ড হারবার থেকে পুরী, কোনও জায়গাতেই ইলিশ ধরার অনুকূল আবহাওয়া নেই। পাশাপাশি ছোট ছোট ডিঙি নিয়ে যারা অল্প পরিসরে ইলিশ ধরেন, তারা সে অর্থে ইলিশ পাচ্ছেন না নদীতে। কারণ, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি নেই। ফলে সমুদ্রের ইলিশ মোহনায় ঢুকছে না। এবার টাটকা ইলিশ উত্তরবঙ্গবাসীর পাতে তুলে দিতে পারবেন কি না, জানেন না এখনও।
শনিবার শিলিগুড়ির বাজারে ঢুকেছে বেশ কিছু সামুদ্রিক মাছ৷ তবে হতাশা বাড়য়েছে সেখানে ইলিশের অনুপস্থিতি৷ সাতশো-আটশো গ্রামের ইলিশ যেটি সারা বছর বাজারে তিনশো থেকে পাঁচশো টাকার ভিতর থাকে, রেগুলেটেড মার্কেটেই তার দাম উঠেছে সাড়ে সাতশো থেকে আটশো টাকা। অন্যদিকে, এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম পাইকারি বাজারে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। তবু ইলিশের মরশুম বলে কথা, হিমঘরের ইলিশ খাবার পাতে নিয়েই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছেন উত্তরবঙ্গবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.