ছবি: প্রতীকী
দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: অনেক লড়াইয়ের পর আইনি স্বীকৃতি মিলেছে। কিন্তু সমাজ? সে তো এখনও অনেকটা পিছিয়ে। তাই হুগলির (Hooghly) পোলবায় দুই সমকামী নারীর বিবাহ শেষ পর্যন্ত সার্থক পরিণতি পেল না। পরিবারের প্রচণ্ড চাপ সহ্য করতে না পেরে শেষপর্যন্ত দুই মেয়ে বিচ্ছেদকে মেনে নিতে বাধ্য হলেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media) মাধ্যমে দুই নারীর পরিচয় হয়। একজনের বাড়ি দাদপুরের সাটিথান গ্রামে। অপরজন বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ার বাসিন্দা। সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই দু’জনের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই প্রেমের টানেই একজন মাঝেমধ্যেই আরেকজনের বাড়িতে চলে আসত। পরিবারের লোকজন প্রথমে তাঁদের বন্ধুত্ব (Friendship) মনে করে সম্পর্কটাকে সহজভাবে মেনে নিয়েছিল।
পরবর্তীতে বাড়িতে আসা-যাওয়ার সূত্র ধরে দু’জনের মধ্যে এই প্রেমের সম্পর্ক আরও গভীর হয়। দু’জনই বুঝতে পারেন, তাঁদের এই সম্পর্কের কথা পরিবারকে জানালে মেনে নেবে না। তাই বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে এবং একসঙ্গে সংসার করার সিদ্ধান্ত নেন। গত মাসে একজন মাকে জানান, কাজের খোঁজে বাইরে যাচ্ছেন। কিন্তু এরপর মেয়ে আর বাড়ি ফেরেনি।
এরপর তাঁরা দু’জন পালিয়ে হুগলি থেকে বারাকপুরে পালিয়ে যান। তারপর বিয়ে করেন। প্রথম দিকে বিয়ের বিষয়টি কোনও পরিবার জানতে পারেননি। কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়ের বিয়ের ছবি দেখে রীতিমতো হতবাক হয়ে যান বাবা, মা। তবে মেয়ে কাকে বিয়ে করেছে, তা বুঝতে পারেননি। যদিও তাঁদের সন্দেহ হয় যে ‘প্রিয় বন্ধু’র বাড়িতে মেয়ে থাকলেও থাকতে পারে। এরপর গুপ্তিপাড়ার গোসাইডাঙায় সেই ‘বন্ধু’র বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। পরে বন্ধুর পরিবারকে দাদপুরে ডেকে পাঠানো হয়।
সেখানেই দুই নারী নিজেরা কথা বলে ঠিক করেন, দু’জনে আর একসঙ্গে থাকবেন না। তাঁরা জানিয়েছে, বিয়ের পর তাঁরা কিছুদিন বারাকপুরে একটি ঘরভাড়া করেছিলেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের বিয়ের ছবি দেওয়ার পরই জানাজানি হয়ে যায়। অপর পরিবারের অভিযোগ, ঝুম্পার পরিবার তাঁদের মেয়েকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পরিবার। তিনি কোনও অবস্থাতেই সম লিঙ্গের এই বিবাহকে মেনে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর বাবার বক্তব্য, মেয়ে ভুল করেছে। তার ভুল শোধরাতে হবে। তারপরও যদি মেয়ে ভুল না শোধরায় তবে তার চিকিৎসা করাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.