রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: এবার আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) শহরে চিতাবাঘের গর্জনের আওয়াজ রেকর্ডিং করলেন এক যুবক। আর তাতে ফের শহর জুড়ে চিতাবাঘ নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। শহর জুড়েও এবার বনকর্মীদের টহলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বক্সা ব্যঘ্র বন কর্তৃপক্ষ। রবিবার রাত ১২ টা নাগাদ আলিপুরদুয়ার শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুপাড়ার রেলঘুমটি-ঝামতলার রাস্তার পাশেই একটি পরিত্যক্ত বাড়ির পেছন দিকে একটি লেপার্ড দেখতে পান বলে দাবি করেছেন এক যুবক। ওই যুবক লেপার্ডের (Leopard) গর্জনের আওয়াজও মোবাইলে রেকর্ডিং করেছেন। রাত ১২ টা নাগাদ এই ঘটনার পরেই বক্সা ব্যঘ্র বন কতৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা এলাকায় বারবার টহল শুরু করেছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া এলাকার মানুষদের ঘর থেকে বের হতে বারণ করেছে বনদফতর।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (Buxa Tiger Reserve) ফিল্ড ডাইরেক্টর অপূর্ব সেন বলেন, “আলিপুরদুয়ার শহরের একাধিক এলাকা থেকে লেপার্ডের আতঙ্কের খবর পাওয়া গিয়েছে। আমরা সব এলাকায় স্পট ভিজিট করেছি। রবিবার রাতেও এক যুবক লেপার্ডের গর্জনের আওয়াজ ভিডিও রেকর্ডিং করেছে বলে দাবি করেছেন। ওই এলাকায় আমরা একটি পায়ের ছাপ পেয়েছি। কিন্তু ওটা লেপার্ডের পায়ের ছাপ কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জঙ্গলের খুব কাছে হওয়ায় আলিপুরদুয়ার শহরে লেপার্ডের আনাগোনা কোন অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। সকলকে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে। কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ফোন করতে বলা হয়েছে।”
এর আগে আলিপুরদুয়ার শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চামরা গোডাউন এলাকায় এক ব্যাক্তির বাড়ির সিসিটিভিতে রাতে একটি বড় লেপার্ডের মতো প্রাণীকে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। শুক্রবার ওই ঘটনার পর এলাকায় বনকর্মীরা টহল দিয়েছেন। কিন্তু সিসিটিভির ছবি অতটা স্পষ্ট না হওয়ায় সেটা লেপার্ডই কিনা তা বুঝে উঠতে পারেনি বনদপ্তর। এবার লেপার্ডের গর্জনের আওয়াজ রেকর্ডিং (Voice recording) হওয়ায় ফের শহর জুড়ে চিতাবাঘের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
বাবুপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা যুবক অগ্নিভ সরকার ঘরের ভেতর থেকে এই আওয়াজ রেকর্ডিং করেন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ তখন রাত ১২টা। আমি ঘরে মোবাইলে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিলাম। হঠাৎ কেমন একটা আওয়াজ শুনতে পাই। প্রথমে ষাঁড়ের আওয়াজ বলে মনে করছি। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলের রেকর্ডিং অপশন অন করে দি। বাইরে বেড়িয়ে দেখি, বাড়ির পাশের পাইপ বেয়ে একটি লম্বা প্রাণী যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে পরিষ্কার দেখা যায়নি ওটা কী প্রাণী। মোবাইলে সাউন্ড রেকর্ডিং হয়েছে। পরে বনকর্মীরা এলে তাদের সাউন্ড শোনাই। এটা লেপার্ডের সাউন্ডের আওয়াজ বলে তারা নিশ্চিত করেন।”
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে আলিপুরদুয়ার শহরে লেপার্ড ঘাঁটি গেড়েছিল। সেবার কালভার্টের তলায় বেশ কয়েকটি কুকুরকে খেয়ে ফেলেছিল লেপার্ড। এবার আবার তিনি শহরে আশ্রয় নিয়েছেন কিনা সেই দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে আলিপুরদুয়ার শহরবাসীর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.