রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: মানবশিশু খুবলে খেল চিতাবাঘ। বুধবার বিকেলে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটে আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়া মাদারিহাট ব্লকের ধুমচিপাড়া চা-বাগানের ১২ নম্বর লাইনে। জখম শিশুকে মাদারিহাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বুধবার বিকেলে চা-বাগানের পাশেই খেলছিল ৫ বছরের শিশু ইদেন নায়েক। আচমকা চা-বাগানের ভেতর থেকে একটি চিতাবাঘ এসে শিশুটিকে ধরে ফেলে। গলায় কামড়ে শিশুটিকে চাবাগানের ভেতরে নিয়ে যায় চিতাবাঘটি। স্থানীয় বাসিন্দারা চিতাবাঘটিকে তাড়া করলেও সহজেই শিশুটিকে ছাড়েনি সে। প্রায় ৫ মিনিট বাদে শিশুর দেহ ছেড়ে পালিয়ে যায় বাঘ। স্থানীয়রা শিশুটিকে মাদারিহাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
[এই গ্রামে দুর্গার পাশাপাশি পীরের আরাধনাও করেন হিন্দুরা]
এই ঘটনায় তাজ্জব বনে গিয়েছেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। জলদাপাড়া বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “এই ঘটনা জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ইতিহাসে দ্বিতীয় ঘটনা। যেখানে মানবশিশুকে আক্রমণ করল চিতাবাঘ। আমরা এই ঘটনায় তাজ্জব হয়ে গিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। ধুমচিপাড়াতে চিতাবাঘ ধরার জন্য খাঁচা পাতা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটবে তা আমরা ভাবতেই পারিনি। সাধারণত মানুষ দেখলে ভয় পায় বনের এই পশু। কিন্তু এ কী কাণ্ড ঘটালো এই বুনো চিতাবাঘ! প্রাথমিকভাবে আমরা মৃত শিশুর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দিচ্ছি। পরে আরও দুই লক্ষ টাকা অর্থাৎ মোট চার লক্ষ টাকা সাহায্য পাবে মৃত শিশুর পরিবার।”
[সংশোধনাগারে বন্দির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, আত্মহত্যা বলে দাবি পুলিশের]
জানা গিয়েছে, মৃত শিশুর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত শিশুর বাবা ও মা দুজনেই ধুমচিপাড়া চা-বাগানের শ্রমিক। ঘটনার সময় দুজনেই চা-বাগানের কাজ করছিলেন। বাবা কুণাল নায়েক ও মা প্রেমিকা নায়েক এই ঘটনায় শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন। মৃত শিশুর দিদি অনসূয়া নায়েকের সঙ্গে খেলার সময় চিতাবাঘের হামলার মুখে পড়ে ইদেন। চিতাবাঘের মানবশিশুকে আক্রমণের ঘটনায় তাজ্জব বনে গিয়েছেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া ধুমচিপাড়া চা-বাগানে বেশ কিছুদিন থেকেই চিতাবাঘের আনাগোনা চলছিল। চিতাবাঘ ধরতে খাঁচাও পেতেছিল বনদপ্তর। কিন্তু খাঁচাতে আটক হয়নি চিতাবাঘ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.