শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ইঁদুর ধরার ফাঁদে ধরা পড়ল আস্ত একটা চিতাবাঘ (Leopard)! শনিবার ডুয়ার্সের মরাঘাট রেঞ্জের অন্তর্গত সাউথ-মরা ঘাট ১২ নম্বর কম্পার্টমেন্ট সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা নজরে আসে চা শ্রমিকদের। ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়। ইঁদুর (Rat) ধরার ফাঁদে কীভাবে পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ ধরা পড়ল, সেই প্রশ্ন উঠছে। দীর্ঘক্ষণের চিতাবাঘটিকে ফাঁদমুক্ত করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রেসকিউ সেন্টারে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।
ঘটনাস্থলের পাশেই হলদিবাড়ি (Haldibari)চা বাগান। চিতাবাঘটিকে ফাঁদ থেকে মুক্ত করতে শেষ পর্যন্ত ট্রাঙ্কুলাইজার টিম ডাকতে বাধ্য হয় বনদপ্তর। বিকেলের দিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে চিতাবাঘটিকে ফাঁদ থেকে বের করে জলদাপাড়ার (Jaldapara)খয়েরবাড়ি রেসকিউ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিতাবাঘটিকে আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে বনদপ্তর জানিয়েছে।
শনিবার হলদিবাড়ি বাগানের চা শ্রমিকরা কাজে যাওয়ার সময় চিতাবাঘের গর্জন শুনে চমকে ওঠেন। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সাহস করে কাছে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, বাগান এবং জঙ্গলের মাঝামাঝি এলাকায় চোরাশিকারিদের পেতে রাখা একটি ফাঁদে আটকে পড়েছে পূর্ণবয়স্ক একটি চিতাবাঘ। খবর পেয়ে মরাঘাট রেঞ্জ এবং বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। দেখতে পান, ঝরা পাতার আড়ালে ছোট্ট একটি ফাঁদ। মরাঘাট রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার রাজকুমার পাল জানান, ”এই ধরনের ফাঁদ সাধারণত বনবসতি এবং চা বাগান এলাকার কিছু মানুষ বেআইনিভাবে জংলি ইঁদুর এবং খরগোশ ধরার জন্য ব্যবহার করে থাকেন। সেই ফাঁদে চিতাবাঘটির একটি পায়ের নখ জড়িয়ে যায়। এমনভাবে তা জড়িয়ে যায় যা খোলার চেষ্টা করেও না পেরে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে চিতাবাঘটি।”
সেই অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধারের জন্য ঘুমপাড়ানি গুলি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বনদপ্তর। রেঞ্জ অফিসার রাজকুমার পালের বক্তব্য, জলপাইগুড়ি থেকে ঘুমপাড়ানি গুলি চালাতে দক্ষ বনকর্মীদের নিয়ে গিয়ে চিতাবাঘটিকে ঘুম পাড়ানো হয়। তারপর ধীরে ধীরে তাকে ফাঁদমুক্ত করে জলদাপাড়ার খয়েরবাড়ি রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় চিতাবাঘটিকে। সেখানে চিকিৎসা চলছে তার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.