রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: মাসদেড়েকের চেষ্টায় মিলল সাফল্য। সোমবার সকালে আলিপুরদুয়ারের গ্যারগেণ্ডা চা বাগানে খাঁচাবন্দি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। তবে ওই চিতাবাঘটি ‘মানুষখেকো’ কি না এখনই তা বলা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন লঙ্কাপাড়ার রেঞ্জ অফিসার বিশ্বজিৎ বিশোই। আপাতত দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে ওই চিতাবাঘটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিতাবাঘ ধরা পড়ায় যেন শান্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন স্থানীয়রা।
কারও বাড়ির পোষ্য আবার কখনও সাধারণ মানুষের উপর হামলা করছিল চিতাবাঘ। তার জেরে আতঙ্কে দু’চোখের পাতা এক করতে পারছিলেন না আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটের গ্যারগেণ্ডা চা বাগান লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। ছোটখাটো চোটাঘাত তো হচ্ছিলই। তবে গত ১৭ ডিসেম্বর আতঙ্কে কাঁটা হয়ে যান প্রায় সকলেই। কারণ ওদিনই গ্যারগেণ্ডা চা বাগান থেকে বেপাত্তা হয়ে যায় বছর উনিশের এক তরুণী। সকলেই ভেবেছিলেন হয়তো চিতাবাঘেই টেনে নিয়ে গিয়েছে তাঁকে। আশঙ্কাই যেন সত্যি হল। হাজারও খোঁজাখুঁজির পর তুলসিপাড়া চা বাগান থেকে উদ্ধার হয় তরুণীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। বনদপ্তরের গাফিলতিতেই চিতাবাঘ তরুণীর প্রাণ কেড়েছে বলেই অভিযোগ করতে থাকেন স্থানীয়রা।
এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসে বনদপ্তর। চিতাবাঘের খোঁজে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। মাদারিহাটের তুলসিপাড়া, গ্যারগেণ্ডা, রামঝোড়া, ধুমচিপাড়া চা বাগানে পাতা হয় ৯টি খাঁচা। তবে তাতেও প্রায় দেড় মাস ধরে পালিয়ে পালিয়ে বাঁচছিল ওই চিতাবাঘটি। আচমকাই সোমবার সকালে মিলল সুসংবাদ। এদিনই গ্যারগেণ্ডা চা বাগানের চার নম্বর সেকশনে বনদপ্তররে পাতা খাঁচায় ধরা দেয় চিতাবাঘটি। খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় লঙ্কাপাড়া রেঞ্জের বনকর্মীরা। চিতাবাঘটিকে দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরই ছেড়ে দেওয়া হবে তাকে।
গ্যারগেণ্ডা চা বাগানে ওই তরুণীর মৃত্যুর জন্য কি সত্যিই এই চিতাবাঘটি দায়ী, বারবারই উঠছে সেই প্রশ্ন। যদিও এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছুই বলতে পারছেন না বনকর্মীরা। এ প্রসঙ্গে লঙ্কাপাড়ার রেঞ্জ অফিসার বিশ্বজিৎ বিশোই বলেন, “খাঁচাবন্দি ওই চিতাবাঘটি পূর্ণবয়স্ক। আয়তনেও সে যথেষ্টই বড়। এর আগে এত বড় মাপের কোনও চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি হয়নি। তবে চিতাবাঘটি ‘মানুষখেকো’ কি না তা এখনই বলা যাবে না। আপাতত চিতাবাঘটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তারপরই বোঝা যাবে চিতাবাঘটি আদতে ওই তরুণীর মৃত্যুর কারণ কি না।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.