সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের রাজ্যে শাসক দলের বিরুদ্ধে বলগাহীন সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বাংলা বনধের ডাক দিল বামফ্রন্ট৷ আজ রাজ্য বামফ্রন্টের তরফে আগামী শুক্রবার বাংলা বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ তবে, সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাত্র ছ’ঘণ্টার প্রতীকী বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ সকাল ছ’টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে বলে আজ বামেদের তরফে জানানো হয়েছে৷
বামেদের বনধ ডাকার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নবান্ন থেকে তীব্র ভাষায় প্রতিক্রিয়া দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিন তিনি সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্যে কোথায় কোনও বনধ হবে না৷ রাজ্যের ৩৪ বছর ধরে বনধ-অবরোধ ছাড়া আর কী করছে সিপিএম? ওদের লজ্জা নেই৷ সংগঠন নেই, কর্মী নেই৷ তারপরও বনধ ডাকছে৷ সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি একসঙ্গে বনধ ডেকেছে৷ শুনে রাখুন, ওই সব বনধ-টনধ হবে না৷’’
আজ বুধবার দুপুরে বামের তরফে একটি বৈঠক দেওয়া হয়৷ ১৭টি বাম শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু৷ এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে বিমান বসু বলেন, ‘‘আগে থেকেই ঘোষণা করা হয়েছিল৷ রাজ্যে বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত ভোট করানোর জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল৷ বলা হয়েছিল, বিরোধীশূন্য ভোট করা হলে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়া হবে৷ ফলে, বোঝা যাচ্ছে রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি কোথায়৷ রাজ্যের মানুষের ভোটের অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে বসেছে৷ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রতীকী ছ’ঘণ্টা বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে৷’’
অন্যান্য ধর্মঘটের মতো অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে৷ চৈত্র সংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখের একটা আলাদা গুরুত্ব আছে বাঙালির কাছে৷ তাই ধর্মঘটের সময় কমানো হল বলে বিমান বসু জানিয়েছেন৷ একই সঙ্গে আইনি লড়াইও চলবে৷ বিমান বসুর কথায় আইন ও আন্দোলন সমানতালে চলবে৷ আজ, বৃহস্পতিবার ও আগামিকাল শুক্রবার কমিশন দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে৷ এদিন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পক্ষ থেকে কমিশনের সামনে বিক্ষোভের জন্য মিছিল করে বামেরা৷ কিন্তু জাদুঘরের সামনেই পুলিশ তাদের আটকে দেয়৷
তবে, শুক্রবার বামেদের ছ’ঘণ্টা বনধ ডাকাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে নয়া বিতর্ক৷ জেলায় জেলায় সংগঠনে ঘুণ ধরার কারণেই কি ১২ ঘণ্টার পরিবর্তে ছ’ঘণ্টার বনধ ডাকার সিদ্ধান্ত বামেদের? নাকি, ঝামেলা এড়িয়ে ছ’ঘণ্টা নিপাট দায় সারা বনধ? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, রাজ্যের ১২ বা ২৪ ঘণ্টার বনধ ডাকার মতো পরিকাঠামো, লোকবল নেই বামেদের৷ এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে বনধ ডেকে নতুন করে ব্যর্থতার দায় নিতেও অপ্রস্তুত বামফ্রন্ট৷ তার উপর বনধ রুখতে রাজ্য সরকারের কড়া চ্যালেজ্ঞের মুখোমুখি হওয়াটাও বামেদের কাছে বড় পরীক্ষা৷ ফলে, সবদিক বিবেচনা করেই বামেদের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন রাজ্যের পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.