প্রতীকী ছবি।
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: পঞ্চায়েত ভোটে বাম-কংগ্রেসে জোট হচ্ছে না ঘাটালে। দুই রাজনৈতিক দলই গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে আলাদা আলাদা প্রার্থী দিচ্ছে। জোট না হওয়ায় একে অপরকে দুষছে দুই দল। ইতিমধ্যেই সিপিএমের পক্ষ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে মনোনয়ন পত্র জমা পড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোমবার শুরু হয়েছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ।
কিন্তু কেন জোট হচ্ছে না? ঘাটালের সিপিএম নেতা তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরা বলেন , ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে কখনই আমাদের জোট হয়নি। আসন সমঝোতা বলতে পারেন। যার যেখানে জনভিত্তি রয়েছে তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে নেওয়া হয়েছে। আমি নিজে ঘাটালের প্রবীন কংগ্রেস নেতা জগন্নাথ গোস্বামীকে আলোচনায় বসতে বলেছিলাম। কিন্তু ওনার পক্ষ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। তাই আমরা মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছি। ’’ অন্যদিকে, ঘাটালের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি জগন্নাথ গোস্বামী বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই সিপিএমের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে শুরু করে দেয়। ফলে আলোচনার আর কোনও জায়গা নেই। তবে এতে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা ভেঙে পড়েননি। প্রায় ২০ বছর পর ঘাটালের কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা নিজেদের প্রতীক হাত চিহ্নে ভোট দিতে চলেছেন এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে। কেননা গত ২০ বছর ধরে আমরা কংগ্রেস দলটা করলেও ভোট দিতে হয়েছে অন্য প্রতীকে। কখনও কাস্তে, কখনও জোড়া ফুলে বা কখনও পিডিএস নামে এক অখ্যাত দলের প্রতীক চিহ্নে। আমরা এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে চেষ্টা করছি সমস্ত আসনে প্রার্থী দিতে।’’
জানা গিয়েছে, ঘাটাল মহকুমার দাসপুরের দুটি ব্লকেও বামেদের সঙ্গে কোনও বোঝাপড়া না হওয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী দিচ্ছে কংগ্রেস। দাসপুর এক নম্বরক ব্লকে কংগ্রেসের প্রতীক চিহ্ন নিয়ে জেলা পরিষদে দাঁড়াচ্ছেন তারাপদ পাত্র, অনিমা দলুই ও রেখা সামন্ত এবং দাসপুর দুই নম্বর ব্লকে জেলা পরিষদ আসনে দাঁড়াচ্ছেন অমল মুখোপাধ্যায়, মানস জানা ও কল্পনা বেরা। দাসপুরের কংগ্রেস নেতা ব্লক সভাপতি অংশুমান মাজি জানাচ্ছেন , ‘‘বামেদের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে শুরু করেছে। ফলে আমরা তো আর বসে থাকতে পারি না। আমরাও পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। ইতিমধ্যেই আমরা দুটি ব্লকের ছয়টি জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছি। আমাদের প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে। জাতীয় কংগ্রেস একটি জাতীয় দল। আমরা সম্মানের সঙ্গেই দলটা করতে চাই। প্রায় ২০ বছর পর আমরা আমাদের দলের প্রতীকে ভোট দিতে চলেছি। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার ফলে কংগ্রেস কর্মী হলেও অন্য দলের প্রতীকে ভোট দিতে হয়েছে। এবার তা হচ্ছে না । ’’ চন্দ্রেকানার দুটি ব্লকের মধ্যে একমাত্র ক্ষীরপাইতে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে আসন সমঝোতা হলেও আর কোনও আসনেই সমঝোতা হয় নি বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.