সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পর্যাপ্ত শৌচাগার নেই। সেই সমস্যা নিয়েই কয়েকমাস ধরে কাজ চলছিল পুরুলিয়া আদালতে। কিন্তু সমস্ত ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই শৌচাগারের দাবিতে শনিবার কর্মবিরতি পালন করলেন পুরুলিয়া জেলা আদালতের আইনজীবীরা।
পুরুলিয়া জেলা আদালতে নতুন ভবনের জন্য মাস চারেক আগে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সেই কারণে আদালত চত্বরে থাকা একাধিক শৌচাগার ভেঙে ফেলা হয়েছে। যার ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন আইনজীবীরা। পুরুলিয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের কক্ষে পুরুষ-মহিলাদের জন্য দুটি শৌচাগার থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়, এমনটাই অভিযোগ আইনজীবীদের।
জানা গিয়েছে, এই আদালতে আইনজীবী ও ক্লার্কের সংখ্যা প্রায় পাঁচশো। তার মধ্যে আইনজীবী ২৫৫ জন। পুরুষ আইনজীবীর সংখ্যা ২৪০। মহিলা আইনজীবী রয়েছেন ১৫ জন। ফলে বার অ্যাসোসিয়েশনের শৌচাগারে প্রতিদিন লাইন পড়ছে। শৌচাগারে লাইন দিতে গিয়ে কাজে সমস্যা হচ্ছে তাঁদের।পুরুলিয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতুল মাহাতো বলেন, “আদালতে আমাদের ব্যবহার করার জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার নেই। তাহলে আমরা যাব কোথায়? সেই কারনেই আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। শৌচাগারের সমস্যার সমাধান না হলে এরপর আমরা এই বিষয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি নেব।”
পুরুলিয়া বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮৮৪ সালে এই আদালত স্থাপিত হয়। ব্রিটিশ আমলে এই এলাকা ছিল বিহারের অন্তর্ভূক্ত। মানভূম, সিংভূম ও সম্বলপুর জেলার সদর আদালত ছিল আজকের পুরুলিয়া কোর্ট। একশো বছরের বেশি প্রাচীন এই আদালতে আইনজীবীদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার না থাকায় রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন আইনজীবীরা।
বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অরুণাভ মহাপাত্র বলেন, “আমরা এই বিষয়ে জেলা ও দায়রা বিচারককে জানিয়েছি। বিল্ডিং ডেভেলপমেন্ট নামে একটি কমিটি আছে, সেখানেও সমস্যার কথা বলেছি। কিন্তু কোন কাজই হয়নি। তাই আমরা কর্মবিরতি করতে বাধ্য হলাম।”
আদালত চত্বরে থাকা ওই শৌচাগার গুলি ভেঙে দেওয়ায় প্রতিদিন আদালতে নানা কাজ নিয়ে আসা মানুষজন যত্রতত্র প্রস্রাব করছেন বলে অভিযোগ। ফলে সমগ্র আদালত চত্বরে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে যাচ্ছে বলেও সরব হয়েছেন আইনজীবীরা। পুরুলিয়া আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী পার্থসারথি রায় বলেন, “এই বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকেও দেখতে হবে। এই দায়িত্ব তাঁদেরও।”
ছবি: সুনীতা সিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.