ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: দুর্ঘটনা কিংবা আত্মহত্যা নয়। খুনই করা হয়েছিল আইনজীবী রজত দে’কে (Rajat Dey)। আর সেই হত্যাকাণ্ডে শেষমেশ স্ত্রীকেই দোষী সাব্যস্ত করল বারাসত আদালত। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর মামলায় সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক। দোষীর চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিজনেরা। রায় শোনার পরই পালটা উচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আইনজীবীর স্ত্রীর পরিবারের।
গত ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে নিউটাউনের ডিবি ব্লকের ফ্ল্যাটে আইনজীবী রজত দে’র অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। আইনজীবীর বাবা দাবি করেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁর আইনজীবী পুত্রবধূ অনিন্দিতা পাল (Anindita Paul)। সে-ই রজতকে পরিকল্পনামাফিক খুন করিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধ। যদিও অনিন্দিতা সেই দাবি খারিজ করে দেয়। প্রথমে জানায়, স্বামীর মৃত্যু নিছকই দুর্ঘটনা। পরে আবারও নিজের বয়ান বদল করে। জানায়, তার স্বামী রজত আত্মঘাতী হয়েছেন। তদন্তে নেমে পুলিশ অনিন্দিতাকে গ্রেপ্তার করে। হাই কোর্টে তার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই ঘটনার জল গড়ায় সর্বোচ্চ আদালতেও। সুপ্রিম কোর্ট থেকেও জামিন পায় অনিন্দিতা। তাই আপাতত জেলের বাইরেই ছিল সে।
এদিকে, মূল মামলাটি বারাসত আদালতে (Barasat Court) চলছিল। একাধিক সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখা হয়। সোমবার মামলার শুনানি চলাকালীন পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারক। তারপরই তিনি জানিয়ে দেন, দুর্ঘটনা কিংবা আত্মহত্যা নয়। রজতকে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় রজতের স্ত্রী অনিন্দিতাকেই দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক।
একথা শুনে এজলাসেই কান্নায় ভেঙে পড়ে অনিন্দিতা। সে দাবি করে, খুন করেনি। রজত এবং অনিন্দিতার একটি ছোট্ট মেয়েও রয়েছে। অনিন্দিতা বলে, “সন্তানকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারব না। আমার সন্তান খুবই ছোট। আমি না থাকলে ও মরেই যাবে।”
এদিকে, পুত্রবধূ দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে নিহত রজতের পরিবার। অনিন্দিতার চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিজনেরা। রায় শুনে অবশ্য উচ্চ আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অনিন্দিতার আইনজীবী। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর বিচারক কী সাজা দেন, সেদিকেই তাকিয়ে দু’পক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.