স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা ও মালদহ: কংগ্রেস ছাড়তে চলেছেন দুই সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি ও মৌসম বেনজির নুর! বিজেপি তাঁদের দলে টানতে চাইছে। কিন্তু তাঁরা তৃণমূলে যেতে পারেন এমন ইঙ্গিত মঙ্গলবার মিলেছে মালদহ জেলার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কথায়। তিনি বলেছেন, “মালদহ জেলার প্রথম শ্রেণির জনপ্রতিনিধিরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আসতে চান। তাঁরা তৃণমূলের উন্নয়নের নৌকায় উঠতে চান। ইতিমধ্যে তাঁরা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।”
বস্তুত, গনি মিথ যে আর মালদহে নেই, সেটা ইতিপূর্বে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কোতোয়ালি ভবনে আগেই রাজনৈতিক ভাঙন ধরেছে। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আবু নাসের খান চৌধুরি। এমনকী, গনি পরিবারের অনেক সদস্যই নাম লিখিয়েছেন তৃণমূলের খাতায়। আর এবার মালদহের দুই সাংসদও কংগ্রেস ছাড়তে চলেছেন, এমন জল্পনা ছড়িয়েছে। ঘটনাচক্রে লোকসভা নির্বাচনেরও আর বেশি দেরি নেই। মালদহে কংগ্রেসের মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা দলে দলে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় দাগটুকু কাটতে পারেনি কংগ্রেস। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত সবেতেই খারাপ ফল হয়েছে। ফলে ডালু ও মৌসমের কংগ্রেস ছাড়ার খবর ছড়িয়েছে মালদহের উত্তর থেকে দক্ষিণে। যার খানিকটা ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে।
[টেক্সট বই পড়েই সাফল্য, মাধ্যমিকে প্রথম হয়ে উচ্ছ্বসিত কোচবিহারের সঞ্জীবনী]
মঙ্গলবার মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী তৃণমূল সদস্যদের এক সংবর্ধনা সভায় যোগ দেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি বলেন, “আর কংগ্রেসের নয়, মালদহ এখন তৃণমূলের দুর্গ। আর কেউ কংগ্রেসে থাকবে না। খুব শীঘ্রই মালদহ জেলার অনেক তাবড় তাবড় নেতা বাম-কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন।”
এটা মনে করা হচ্ছে, লোকসভা নির্বাচনের ঘণ্টা বাজার আগেই কংগ্রেস ত্যাগ করতে চলেছেন ডালু ও মৌসম। বিজেপি তাঁদের দলে টানার কৌশল নিয়েছে। কিন্তু সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের কারণে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেবেন না বলেই ডালু ও মৌসমের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে। ফলে তাঁদের তৃণমূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। এমনকী, মালদহে খারাপ ফলের জন্য প্রদেশ নেতৃত্বের উপরেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জেলা কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা। বরকত গনি খান চৌধুরির জেলায় কংগ্রেসের সংগঠন শক্তিশালী করতে এআইসিসি বা প্রদেশ কেউই সাহায্য করছে না বলে অভিযোগ সামনে এনেছেন জেলার নেতৃবৃন্দ।
এই প্রেক্ষাপটে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “বাংলা জুড়ে উন্নয়ন হচ্ছে। আর এই উন্নয়নের রথে চেপে আগামী লোকসভা ভোটে মালদহের দু’টি আসনে জিতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপহার তুলে দেব আমরা। পঞ্চায়েতে নির্বাচনে ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছি আমরা। এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে লোকসভায় ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে দু’টি লোকসভা আসনেই লাখের উপর ভোটে জিতবে তৃণমূল কংগ্রেস।”
[ভুয়ো রেজিস্ট্রেশনে রমরমিয়ে ব্যবসা, নদিয়ায় পুলিশের ফাঁদে জাল ডাক্তার]
পঞ্চায়েতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “কাজের উপর দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাফল্য এসেছে। ফলে দায়িত্ব বেড়েছে আমাদের। আরও ভাল কাজ করতে হবে। মালদহে আমরা ৭০ শতাংশ আসন নির্বাচনে জিতে এসেছি। মালদহে যেসব ত্রিশঙ্কু বোর্ড রয়েছে, প্রত্যেকটিতে যাতে তৃণমূলের প্রধান এবং উপপ্রধান হয় সেই উদ্যোগ নিতে হবে। আগামী একুশে জুন কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন তিনি তাঁর বার্তা দেবেন।”
তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ডালু ও মৌসমের কংগ্রেস ছাড়ার জল্পনা। যা নিয়ে মালদহ উত্তরের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নুরের বক্তব্য, “দলের কিছু লোক তৃণমূলে যাচ্ছেন, এটা ঠিক। দলে কিছু গাফিলতি তো আছে। তা সংশোধন করতে হবে, না হলে সমস্যা হবে। আমার কাছে তৃণমূলে যোগদানের কোনও প্রস্তাব আসেনি।”
[ঝাড়ফুঁকের নামে যুবতীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ, ধৃত মৌলবি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.