শেখর চন্দ্র, আসানসোল: মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরও আসানসোলে জমি মাফিয়াদের তাণ্ডব! হিরাপুর থানার অন্তর্গত আপার হিলভিউ এলাকায় একটি জমির মালিকানা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড। এই আবহে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসককে চিঠি দিলেন খোদ আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। বৈঠক করে তিনি এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন, কোনও দোষী ছাড়া পাবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা এক সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, হিলভিউ এলাকায় প্রায় ৪০-৫০ জন এক ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে রেখে কয়েকজনকে মারধরও করেছে। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও দেখা গিয়েছে। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকও। জানা গিয়েছে, আসানসোল হিরাপুর থানার অন্তর্গত আপার হিলভিউ এলাকায় একটি ফাঁকা জমিতে কাজ শুরু হতেই একদল দুষ্কৃতী হামলা চালায়। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, লাঠি, ডান্ডা নিয়ে জমি মাফিয়ারা তাণ্ডব চালাচ্ছে। জমি সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই হামলা। উদ্দেশ্য জমি কেড়ে নেওয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জমি তাদের বলে দাবি করতে থাকে দুষ্কৃতী দল। সেই জমির আরও একটি দলিল রয়েছে অন্য ব্যক্তির কাছে। তিনিও নিজেকে জমির মালিক বলে দাবি করেছেন। এই ঘটনার পর আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা একজোট হয়ে হিরাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি, আসানসোল উত্তরের বিধায়ক তথা আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের দ্বারস্থ হন।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আসরে নামেন খোদ আইনমন্ত্রী। বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। সেখানেই তাঁকে উদ্বিগ্ন দেখিয়েছে। বৈঠকে মন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন সিসিটিভি ফুটেজে তিনি দেখেছেন দুষ্কৃতীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তিনি বলেন, “আমি জেলাশাসককে নিজের প্যাডে চিঠি লিখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এর পিছনে যারাই থাকুক না কেন, শাস্তি পাবে। কাউকে ছাড়া হবে না।” ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার না হলেও পিছনে কারা রয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আসানসোলের মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আগেও জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। যে জমিগুলো মাফিয়ারা নিজেদের নামে করে নিয়েছে তা নিয়ে তিনি তদন্ত করার কথা বলেছেন মন্ত্রী। পাশাপাশি, ওই এলাকায় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হবে বলে যে জায়গাটি সরকার বেছে রেখেছে, সেই জায়গাটি কীভাবে মাফিয়ারা নিজের নামে নথিভুক্ত করেছে, তা নিয়ে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকদের বিষয়টা খতিয়ে কথা বলেছেন মন্ত্রী। তাঁর হস্তক্ষেপের পর এলাকার মানুষ কিছুটা হলেও আতঙ্ক মুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
জমি দখল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারির পর উইলসন নামে এক জমি মাফিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জাতীয় সড়কের পাশে সরকারি জমি দখল ও পুকুর ভরিয়ে নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। তারপরে দীনেশ গড়াই নামে আরও এক মাফিয়াকে গ্রেপ্তার হয়। কিন্তু তারপরও মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এবার আসরে নামতে হল খোদ ময়ল ঘটককে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.