Advertisement
Advertisement

বিশ্বভারতীতে এবার ফাঁস জমি কেলেঙ্কারি

বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, সিবিআই জানতে চেয়েছে–১) ফিনান্স অফিসার অতুল ত্রিবেদী তাঁর কার্যকালে কী কী কাজ হয়েছে, তার সম্পূর্ণ তথ্য৷ ২) সুশান্ত দত্তগুপ্ত উপাচার্য থাকার সময় যে সব নিয়োগ হয়েছে তার তথ্য৷ ৩) ভাষাভবন, নতুন কেন্দ্রীয় অফিস, নতুন তৈরি হওয়া বিভিন্ন হোস্টেলের খরচের পতি, খরচের পরিমাণের তথা৷ ৪) সুইমিং পুল তৈরিতে কত খরচ হয়েছে, কার নির্দেশে হয়েছে, তার সমস্ত তথ্য৷ ৫) বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ পতি, তাঁদের নিয়োগ কোন কোন অধিকর্তা দেখেন, তাঁদের বেতন, টেন্ডার পতির সম্পূর্ণ তথ্য৷

Land Scam in Visva Bharati
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 26, 2016 2:58 pm
  • Updated:May 26, 2016 4:06 pm  

কৃষ্ণকুমার দাস ও ভাস্কর মুখোপাধ্যায়: শুধুমাত্র বেআইনি নিয়োগ নয়, শান্তিনিকেতনে জমি কেনা-বেচার বড় কেলেঙ্কারির চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল বিশ্বভারতীর সিবিআই তদন্তে৷ বিশ্বভারতীর জমি সস্তায় ঘনিষ্ঠদের পাইয়ে দেওয়া ছাড়াও প্রোমোটারের কাছ থেকে বাড়তি দাম দিয়ে কেনার ক্ষেত্রেও ‘কাটমানি’ খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ বসন্ত-উৎসব যে মাঠে এখন অনুষ্ঠান হয় তার উল্টোদিকে হাতিপুকুরে এই জমি কেলেঙ্কারি ঘটেছে বলে তথ্য এসেছে সিবিআই-এর কাছে৷ গোটা কেলেঙ্কারিতে বিশ্বভারতীর একাধিক শীর্ষ পদাধিকারী এবং ভুবনডাঙায় বাড়ি এক কুখ্যাত জমি-মাফিয়া যুক্ত৷ বিশেষ করে পুকুর ভরাট করে গুরুপল্লি লাগোয়া একটি প্লটে যাওয়ার জন্য বিশ্বভারতীর জমির উপর দিয়ে রাস্তা বানিয়ে সুযোগ করে দেওয়া এক পদাধিকারী নামমাত্র মূল্যে প্রায় দশ কাঠা জমি হাতিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ৷ বিশ্বভারতীর একাধিক অধ্যাপক এবং এলাকার পঞ্চায়েত কর্তারাও বুধবার তথ্য দিয়ে এদিন স্পষ্ট দাবি করছেন, ” নামমাত্র মূল্য নয়, বিনা পয়সায় ওই দশ কাঠা জমি নিয়েছিলেন সেই পদাধিকারী৷” বস্তুত এই কারণে তদন্তের গতিপ্রকৃতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বভারতীর আরও তিনজন অধিকর্তার নামে নতুন করে এফআইআর করতে চলেছে সিবিআই৷ এঁদের মধ্যে একজন ডিরেক্টর রয়েছেন৷ সব মিলিয়ে কবিগুরুর নোবেল চুরির সময় গোটা শান্তিনিকেতনে হা-হুতাশ থাকলেও এবার দুর্নীতির ইস্যুতে সিবিআই তদন্ত শুরু হতেই রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বভারতীতে৷
সিবিআই তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সংগীতভবনের এক নাটকের অধ্যাপক, রবীন্দ্রভবনের এক ফটোগ্রাফারের নিয়োগ নিয়ে বিশ্বভারতীর কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে৷ এর সঙ্গে বিশ্বভারতীর ৩১ জন অধিকর্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্টের লেনদেনের তথ্য চাওয়া হবে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে৷ কারণ, সিবিআইয়ের সন্দেহ বিভিন্ন নিয়োগ, ভবন ও হোস্টেল তৈরি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে৷ এছাড়াও হাতিপুকুরে জমি কেনা-বেচার মতো নানা কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে যাওয়া বিভিন্ন আধিকারিকদের ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্টও যে সিবিআই চেয়ে পাঠাবে তা এখন স্পষ্ট৷ উল্টোদিকে সুশান্ত দত্তগুপ্তর সময়ে যে সমস্ত বেআইনি নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল তাতে বেশ কয়েকজন প্রাক্তন আশ্রমিকের নাম জড়িয়েছে৷ ওই সমস্ত আশ্রমিকরা প্রাক্তন উপাচার্যর ঘনিষ্ঠ ছিলেন৷ স্বভাবতই বিশ্বভারতীতে দুর্নীতির জেরে সিবিআই তল্লাশির জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এখন গুরুপল্লি, রতনপল্লি থেকে শুরু করে গোটা শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিকদের একাংশের মধ্যেও৷ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য প্রধানমন্ত্রী, পরিদর্শক দেশের রাষ্ট্রপতি আর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনের পর দিন একাধিক দুর্নীতি হয়ে চলেছে৷ অভিযোগ, নিয়োগ থেকে আর্থিক দুর্নীতি একের পর এক হয়ে চলেছে৷ আর দুর্নীতির সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলেন বরখাস্ত হওয়া উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত৷ তাঁর সময় একটি পদের বিজ্ঞাপন দিয়ে চারজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে৷ শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার পরেও একাধিক ব্যক্তিকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার, অধ্যাপক-সহ বিভিন্ন্ পদে ঢোকানো হয়েছে৷ গত চার বছরে বিশ্বভারতীতে যে ভবন, হস্টেল তৈরি হয়েছে, সেখানেও ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে৷
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, সিবিআই জানতে চেয়েছে–১) ফিনান্স অফিসার অতুল ত্রিবেদী তাঁর কার্যকালে কী কী কাজ হয়েছে, তার সম্পূর্ণ তথ্য৷ ২) সুশান্ত দত্তগুপ্ত উপাচার্য থাকার সময় যে সব নিয়োগ হয়েছে তার তথ্য৷ ৩) ভাষাভবন, নতুন কেন্দ্রীয় অফিস, নতুন তৈরি হওয়া বিভিন্ন হোস্টেলের খরচের পতি, খরচের পরিমাণের তথা৷ ৪) সুইমিং পুল তৈরিতে কত খরচ হয়েছে, কার নির্দেশে হয়েছে, তার সমস্ত তথ্য৷ ৫) বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ পতি, তাঁদের নিয়োগ কোন কোন অধিকর্তা দেখেন, তাঁদের বেতন, টেন্ডার পতির সম্পূর্ণ তথ্য৷ সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে ১৭০টি বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে৷ যাঁদের জেরা করা হয়েছে এবং তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচেছ৷ এমনকী বিশ্বভারতীর ৩১ জন আধিকারিকের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউণ্টে লেনদেনের তথ্য খুব তাড়াতাড়ি ব্যাঙ্কের কাছে জানতে চাওয়া হবে৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement