ফাইল চিত্র।
গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: জমি জট কাটিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরের পার্কিংলট আধুনিকীকরণে আশার আলো দেখছেন দুই দেশের সরকারি আধিকারিক থেকে ব্যবসায়ীরা। কেন্দ্রীয় ল্যান্ড ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান আদিত্য মিশ্রর নেতৃত্বে বুধবার সাতজনের প্রতিনিধি দল এবং বাংলাদেশের ল্যান্ড ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তিনজন অর্থাৎ দুই দেশের মোট ১০ জনের প্রতিনিধি দল ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে পরিদর্শনে আসেন। পাশাপাশি বসিরহাট ঘোজাডাঙ্গা আমদানি-রপ্তানি সংস্থার সম্পাদক সঞ্জিব মন্ডল সহ বহু ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে ছিলেন। গোটা ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত সরজমিনে খতিয়ে দেখেন তাঁরা।
আধিকারিকরা জানান, যত দ্রুত সম্ভব বনগাঁর পেট্রাপোলের আদলে ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত আধুনিকরণ করার চেষ্টা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে যেসব জমি রয়েছে সেগুলোর জট কাটিয়ে খুব শীঘ্রই সীমান্তকে আধুনিকিকরণ করার চেষ্টা করবে কেন্দ্র সরকার। পাশাপাশি, একাধিক জায়গা যেসব রায়ত সম্পত্তি রয়েছে তাদের সঙ্গে বসে জমি অধিগ্রহণ করে সরকারি ভাবে তাদেরকে টাকা দিয়ে জমি নেওয়া হবে। ব্যবসায়ী সঞ্জীব মন্ডল জানান, “পার্কিংলট আধুনিকীকরণে ব্যবসার সুবিধা হবে। বাণিজ্য বাড়বে আরো দ্রুত গতিতে।”
বসিরহাটের ঘোজাডাঙা এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর। যেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক ভারত থেকে বাংলাদেশ আবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে সামগ্রী নিয়ে আমদানি-রপ্তানি করে। ১৯৯৪ সালে ঘোজাডাঙা সীমান্ত আন্তর্জাতিক বন্দর হিসাবে স্বীকৃতি পায়। সেখান থেকেই আমদানি ও রপ্তানি হয়ে আসছে এই বন্দরে। এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয় দুই দেশের মধ্যে। সেখান থেকে কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকার রেভিনিউ পায়। ৩০ বছর ধরে এই আন্তর্জাতিক বন্দরে ব্যবসায়ীরা প্রত্যক্ষভাবে আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু সেখানকার ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ সীমান্তে সরকারি কোনও গোডাউন নেই। সরকারি পার্কিং নেই এমনকি ভিন রাজ্য থেকে আসা ট্রাক চালকদের থাকার কোন সরকারি অতিথিশালা নেই। পাশাপাশি পর্যাপ্ত হোটেল নেই। যার কারণে সমস্যায় পড়তে হয় রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যের কয়েক হাজার চালক, শ্রমিক থেকে ব্যবসায়ীদের। এই সমস্যাগুলোর জেরে ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল বহু ব্যবসায়ীরা। সুবিধা পেতে পেট্রাপোলের দিকে যাচ্ছিল তারা।
সেই সমস্যার সমাধানে ও ঘোজাডাঙার গঠন ও পরিকাঠামোগত মান উন্নয়নে আগেও বৈঠকে বসেছিল স্থানীয় প্রশাসন। জানা গিয়েছে, সেন্ট্রাল পার্কিংয়ের জন্য প্রয়োজন ৪৫ একর জমি। কিন্তু একলপ্তে এত জমি সরকারের কাছে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকেই কিনতে হবে সেই জমি। সিদ্ধান্ত হয়, ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরের দু’পাশে উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়া এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমারেখা বরাবর যে জনবসতি রয়েছে তাদের কাছ থেকেই নেওয়া হবে জমি। সে নিয়ে গত ৪ জানুয়ারি ঘোজাডাঙা সীমান্তের প্রায় দেড়শো পরিবারের সঙ্গে এক প্রস্থ বৈঠক করেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.