নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বগটুই কাণ্ডে সিবিআই (CBI)হেফাজতে থাকা অবস্থায় লালন শেখের মৃত্যুর প্রায় এক সপ্তাহ পর তাঁর বাড়িতে দেখা গেল শাসকদলের কোনও নেতাকে। রবিবার সকালে বগটুই গ্রামে গেলেন বীরভূমের তারকা তৃণমূল সাংসদ (TMC MP) শতাব্দী রায়। আর তাঁকে দেখে আপ্লুত লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি। তিনি সাংসদের হাত ধরে বলেন, ”আপনিই প্রখম এলেন। এখনও তো কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়নি। আমরা আইনের ভরসা লড়ছি। রাজ্যের উপর, বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা আছে।” শতাব্দীও সবরকমভাবে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে এসেছেন বলে খবর।
মার্চ মাসে রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার (Rampurhat Bagtui Incident)পর থেকে পলাতক ছিল অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখ। তবে তদন্তকারী সিবিআইয়ের নজরে ছিল সে। গত ৩ ডিসেম্বর রাতে লালনকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, টাকা-পয়সা ফুরিয়ে যাওয়ায় এলাকায় এসেছিল লালন। সেই সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে লালনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। সোমবার অর্থাৎ ১২ ডিসেম্বর ক্যাম্পের শৌচালয় থেকে লালন শেখের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। আর তা নিয়েই আপাতত উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। সেসময় শিলং সফরে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। তিনি সেখান থেকেই কীভাবে সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যু হল, সেই প্রশ্ন তোলেন। এদিকে, লালনের স্ত্রী সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছেন। এই মৃত্যুর তদন্ত করছে সিআইডি (CID)।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার সকালে বগটুই গ্রামে লালন শেখের বাড়িতে পৌঁছে যান বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় (Satabdi Roy)। তাঁর সঙ্গে এদিন অবশ্য এলাকার কোনও তৃণমূল নেতাকে দেখা যায়নি। শতাব্দীকে দেখে কৃতজ্ঞতা জানান মৃত লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি। তাঁর হাত ধরে রেশমা অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে সিবিআই খুন করেছে। যদি আইনের বিচারে লালনের শাস্তি হত, তাহলে তাঁর আক্ষেপ থাকত না। কিন্তু এভাবে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না রেশমা। তিনি এও জানান, রাজ্য সরকারের উপর, সিআইডির উপর তাঁর ভরসা আছে। স্বামীর মৃত্যুর নেপথ্যে সত্যিটা প্রকাশিত হবেই।
শতাব্দী জানান, তিনি সংসদের কাজে দিল্লিতে ছিলেন, তাই আসতে এত দেরি হল। রেশমাকে তিনি পাশে থাকার সবরকম আশ্বাস দিয়েছেন। আইনগতভাবে সাহায্য করার কথাও জানিয়েছেন। শতাব্দী ফিরে আসার পর রেশমা বিবি জানান, সাংসদকে দেখে তাঁরা অনেকটাই ভরসা পেলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.