সৈকত মাইতি, তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে (Nandakumar) মনুয়া কাণ্ডের ছায়া। প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে খুন করে বাপের বাড়ির রান্নাঘরের মেঝেতে পুঁতে দেওয়া হল দেহ। তারপর তার উপরে সিমেন্ট দিয়ে ঢালাইও করে দেওয়া হয়। এই ঘটনা জানাজানি হতেই শনিবার সকালে ফতেপুর গ্রামে অভিযুক্ত গৃহবধূর বাপের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় স্থানীয়রা।
প্রায় ১৭ বছর আগে ধান্যঘরের বাসিন্দা শেখ নুর মহম্মদের সঙ্গে ফতেপুরের আশমা বিবির বিয়ে হয়। তাদের দু’টি সন্তানও রয়েছে। তবে সম্প্রতি আশমা বিবি শ্যামসুন্দরপুরের বাসিন্দা শেখ দুলালের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে বাধা দেন স্বামী। মাসতিনেক আগে এ নিয়ে এলাকায় সালিশি সভাও বসে। আশমার দাবি, সালিশি সভায় চূড়ান্ত হেনস্তার শিকার হয় সে। তারপরই বদলা নেবে বলে স্বামীকে হুমকিও দিয়েছিল আশমা এবং তার প্রেমিক।
ইতিমধ্যে গত শুক্রবার স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়িতে যায় আশমা। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই রাতেই স্বামীকে খুন করে সে। প্রেমিকের সহযোগিতায় দেহ রান্নাঘরের মেঝেতে পুঁতে দেওয়া হয়। যাতে কারও সন্দেহ না হয় তাই ওই অংশটি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হয়। সোমবার বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসে আশমা। সকলকে জানায় তার স্বামী কাজে গিয়েছেন। এভাবে দিনতিনেক কেটে যায়। তবে নুর মহম্মদ বাড়ি না ফেরায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সন্দেহ হয়। তাকে জেরা করতে শুরু করে। তবে কোনও কথাই জানায়নি আশমা। সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয় নুর মহম্মদের পরিজনেরা। পুলিশি জেরায় অসঙ্গতি পাওয়া যায়। তাতেই সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। এরপর শুক্রবার রাতে দফায় দফায় জেরা করা হয় তাকে। প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে খুন করে দেহ লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে নেয় আশমা। তার প্রেমিককেও মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়।
এরপর পুলিশ শুক্রবার গভীর রাতে আশমাকে সঙ্গে নিয়ে তার বাপের বাড়িতে যায়। কোথায় খুন করা হয়েছিল আর কোথায় দেহ লুকিয়ে রাখা আছে, সেই সমস্ত জায়গা পুলিশকে ঘুরিয়ে দেখায় সে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শনিবার দেহ সিমেন্টের ঢালাইয়ের আস্তরণ সরিয়ে বের করা হবে। এদিকে, খুনের কথা জানার পরই আশমার বাপের বাড়িতে ভাঙচুর চালান নিহতের পরিজনেরা। যাতে আর কোনও অশান্তি না হয় তাই আশমার বাপের বাড়ির আশেপাশে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে আশমার মাকেও আটক করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.