অরূপ বসাক, মালবাজার: বন্ধ হয়েছে একমাত্র উপার্জনের পথ। চরম আর্থিক অনটনের জেরে চিকিৎসা করাতে না পেরে মৃত্যু হল চা বাগানের এক শ্রমিকের। নাগরাকাটা ব্লকের গ্রাসমোড় চা বাগানের কর্মী ছিলেন ওই মহিলা। বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি সব কর্মীরাই। তার মধ্যেই এই শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
উত্তরবঙ্গে প্রায়ই চা-বাগান বন্ধের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। কোথাও শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্বের জেরে এক পর্যায়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বাগান। কখনও আবার লোকসানের কারণে বাগান বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে মাস চারেক আগে বন্ধ হয়ে যায় মালবাজারের গ্রাসমোড় চা বাগান। এর ফলে প্রবল সমস্যার মুখে পড়তে হয় বাগানের শ্রমিকদের। বাগান বন্ধের ফলে শ্রমিকদের জীবনে চরম দুর্দশার ছবি স্পষ্ট হল সোমবার।
জানা গিয়েছে, মালবাজারের নাগরাকাটা ব্লকের গ্রাসমোড় চা বাগানের কর্মী ছিলেন বিহানী ওঁরাও। তাঁর বাড়ি চা বাগানের ৪ নং লাইনে। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাও চলছিল তাঁর। এরই মাঝে মাস চারেক আগে বন্ধ হয়ে যায় চা বাগান। ফলে চরম আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়েন ওই মহিলা ও তাঁর পরিবার।
এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকেরা চিকিৎসার জন্য ওই মহিলাকে বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় আর্থিক সমস্যা। চিকিৎসা না মেলায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মারাত্মক আকার নেয় তার অসু্স্থতা। পরে সোমবার বাড়িতেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এ বিষয়ে বিহানী দেবীর স্বামী সখিলাল ওঁরাও জানিয়েছেন, “৪ মাস ধরে বাগান বন্ধ। ফলে হাতে টাকা-পয়সা নেই। বেশ কয়েকবার স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু তাঁকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।” পাশাপাশি, তিনি স্বীকার করে নেন যে, আর্থিক অনটনের জন্যই এই পরিণতি হয়েছে তাঁর স্ত্রীর। এ বিষয়ে মাল মহকুমা শাসক সৈয়দ এন জানিয়েছেন, চা বাগানের মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। যাতে শ্রমিকদের বকেয়া মিটিয়ে চা বাগানটি খোলা হয় তার চেষ্টা চলছে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.