রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: মাছ নিয়ে বাঙালির উদ্দেশে বেলাগাম মন্তব্য করে আইনি বিপাকে বলিউড অভিনেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ পরেশ রাওয়াল (Paresh Rawal)। তাঁর বিরুদ্ধে বাঙালির ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ তুলে একযোগে বিরোধিতায় নেমেছে তৃণমূল (TMC), সিপিএম। মাছ ও বাঙালির চিরন্তন সম্পর্ককে অপমান করা হয়েছে, এই অভিযোগে সরব তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, দলের আইটি সেলের রাজ্যের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য। পালটা ছড়ায় আক্রমণ শানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কটাক্ষ, ”মোহনবাগানের চিংড়ি আর ইস্টবেঙ্গলের ইলিশ/ মাছ নিয়ে বলতে এলে করে দেব পালিশ।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম তালতলা থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে।
গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনের (Gujarat Assembly Election) প্রচারে গিয়ে বিতর্ক বাঁধিয়েছেন পরেশ রাওয়াল। ভালসাদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “গ্যাসের দাম বাড়লে তা আবার কমে যাবে। মূল্যবৃদ্ধি হলে সেটাও লাগামের মধ্যে চলে আসবে। সকলের কর্মসংস্থানও হবে। কিন্তু দিল্লির মতো আপনাদের চারপাশেও রোহিঙ্গা আর বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ঘুরে বেড়ায়, তখন কী করবেন? কমদামের গ্যাসে মাছ রান্না করে বাঙালিদের খাওয়াবেন?” নির্বাচনী প্রচারে তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠতেই ক্ষমা চেয়েছেন পরেশ রাওয়াল। শুক্রবার সকালে তিনি টুইট করেন, “মাছের কথাটি এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। গুজরাটের মানুষও মাছ রান্না করে খান। বাঙালি জাতিকে অপমান করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। বাঙালি বলতে বেআইনি বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের কথা বোঝাতে চেয়েছি। তবে আমার কথায় কারওর ভাবাবেগে আঘাত লাগলে ক্ষমা চাইছি।”
কিন্তু তিনি অনুপ্রবেশকারী ও বাঙালিকে এক সারিতে বসিয়ে স্পষ্টতই আঘাত করেছেন একটা গোটা জাতির খাদ্যাভ্যাস নিয়ে। তাই ক্ষমা চাইলেও বিতর্কে জল ঢালা যায়নি। এনিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া দেন তৃণমূলের আইটি সেলের রাজ্যের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ”এই কথাগুলি অত্যন্ত অসম্মানজনক। পরেশের মনে রাখা দরকার, বাংলাতেও তাঁর ছবি মুক্তি পায়। সেখানে তিনি বলছেন, কমদামে গ্যাস নিয়ে কি বাঙালিদের মাছ রান্না করে খাওয়াবেন? নাম না করে সকল বাঙালিকে আসলে অনুপ্রবেশকারী বলেছেন বিজেপি সাংসদ।” আর তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) স্পষ্ট বক্তব্য, ”মাছ মানেই বাঙালি। সারা দুনিয়ার সমস্ত বাঙালির আইডেন্টিটি মাছে। উনি এসব জানেন না। তাই তো বলব, মোহনবাগানের চিংড়ি আর ইস্টবেঙ্গলের ইলিশ/ মাছ নিয়ে বলতে এলে করে দেব পালিশ।”
এদিকে, সিপিএম-ও বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। মহম্মদ সেলিম তালতলা থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। তাঁর মতে, এ ধরনের মন্তব্য বাঙালিদের মধ্যে তো বটেই, গোটা দেশেরই সম্প্রীতি নষ্ট করার পক্ষে যথেষ্ট। বলিউড অভিনেতার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ১৫৩এ, ১৫৩বি, ৫০৪ ও ৫০৫ ধারায় মামলা হয়েছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.