দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: খাটের তলায় সুড়ঙ্গ খুঁড়ে মাগুর চাষ করতেন কুলতলির ‘টানেল ম্যান’। পুলিশি জেরায় নাকি এমনই দাবি করেছেন সাদ্দাম সর্দার। এর আগে অবশ্য সাদ্দাম অবশ্য দাবি করেছিলেন, ওই সুড়ঙ্গ শৌচাগার হিসাবে কাজে লাগাতেন তিনি। গোপন সুড়ঙ্গে আদৌ কী হত, সাদ্দামের নানা দাবি ঘিরে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সাদ্দামের বাবা মুকসেদের বিরুদ্ধেও সোনার মূর্তি দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। মুকসেদের দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান সাদ্দাম। সে পৈতৃক সূত্রে ওই চোরা কারবারে জড়িয়ে পড়ে বলেই অভিযোগ। সাদ্দামের দাবি, তিনি মাছ চাষ করতেন। ভেড়িতে কাজ করে ছোট থেকেই নাকি সংসারের খরচ জোগাতেন। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মাগুর মাছ চাষ করার ভাবনাচিন্তা ছিল তাঁর। সে কারণে খাটের নিচে সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিলেন। সাদ্দামের বাড়ির পাশেই রয়েছে খাল। সেই খালের জলের ঢেউকে কাজে লাগিয়ে ওই সুড়ঙ্গের মুখে জাল আটকে মাগুর মাছ চাষের ভাবনাচিন্তা ছিল সাদ্দামের। অবশ্য গ্রামবাসীরা তা জানতে পারায় আপত্তি করেন। সে কারণে অব্যবহৃত অবস্থায় তালাবন্ধ হয়ে পড়েছিল সুড়ঙ্গটি।
উল্লেখ্য, গত সোমবার কুলতলির জালাবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতের পয়তারহাটের সাদ্দাম শিরোনামে চলে আসে। কারণ, ওইদিন তাঁর বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সোনার মূর্তি দেখিয়ে প্রতারণা কারবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাকে পাকড়াও করতে যান তদন্তকারীরা। সেই সময় পরিবার এবং গ্রামের মহিলারা পুলিশকে ঘিরে ধরে। সাদ্দামের ভাই সইরুল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলেও অভিযোগ। সইরুল হলেন সাদ্দামের বাবার তৃতীয় স্ত্রীর সন্তান। দর্জির কাজ করেন সইরুল। জোর শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
ওই সুড়ঙ্গ দিয়েই পালিয়ে যান সাদ্দাম। পুলিশি জেরায় সাদ্দাম দাবি করেন, সোমবারের ওই ঘটনার পর ডিঙি চড়ে খাল পাড় করেন সাদ্দাম। করলার খেতে গা ঢাকা দিয়েছিল কুলতলির ‘টানেল ম্যান’। সন্ধেয় হেঁটে পৌঁছন ঝুপড়িঝাড়ায়। সেখানে গিয়ে বানীরধল এলাকায় মাছের ভেড়ির আলাঘরে আশ্রয় নেন সাদ্দাম। সেখান থেকে বুধবার পুলিশের জালে ধরা পড়েন কুলতলির ‘টানেল ম্যান’। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। ওই আলাঘরের মালিক তথা সিপিএম নেতা মান্নান খানকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.