দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: কুলতলির সাদ্দাম সর্দার যেন মেক্সিকোর কুখ্যাত ড্রাগ লর্ড এল চাপো! ২০১৫ নাগাদ মেক্সিকোর প্রায় অভেদ্য আলতিপলানো জেল থেকে সুড়ঙ্গ পথে পালিয়েছিলেন ড্রাগ লর্ড জোয়াকিম গুজম্যান ওরফে এল চাপো। ঠিক তাঁরই কায়দায় পুলিশের ভয়ে সোমবার কুলতলির নিজের বাড়ি থেকে খাটের নিচের সুড়ঙ্গপথে চম্পট দেন সাদ্দাম সর্দার। যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে কুলতলি থানার পুলিশের।
কুলতলির জালাবেরিয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাজুড়ে দীর্ঘদিন চলছিল নকল সোনার কারবার। শুধু নকল সোনা নয়, সোনার মূর্তি চুরি করে এনে এখান থেকে বিক্রিও করা হতো। কখনও কখনও মানুষকে ফাঁদে ফেলে মূর্তি বিক্রির নামে সর্বস্বান্ত করা হতো ক্রেতাদের। শুধু তাই নয় এর আগেও এক ব্যক্তিকে খুন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এইসব মূর্তি চোর দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় রমরমিয়ে চলছিল এই ব্যবসা। এবার সেই নকল সোনার কারবারি ও মূর্তি চোরদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ করলে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তবে ঘটনায় কোনও পুলিশকর্মী হতাহত হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানার জালাবেরিয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর সোমবার সকালেই ওই এলাকায় এক দল পুলিশ কর্মী তল্লাশিতে যায়। তখনই তাঁদেরকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা। অভিযান শেষ না করে তাঁরা ফিরে আসে ওই এলাকা থেকে। পালিয়ে যায় সোনার চোরের কারবারের সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীরা। এর পর দুই মহিলাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয় কুলতলি থানাতে। তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের তরফে গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করা হয়েছে।
তবে পুলিশ জানিয়েছে যে ব্যক্তিকে ধরার জন্য ওই এলাকায় অভিযান চালিয়েছিল সেই ব্যক্তির নাম সাদ্দাম সর্দার। সাদ্দামের বিরুদ্ধে কুলতলি থানাতে বেশ কয়েকদিন আগে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছিল তার থেকে সোনার মূর্তি দেওয়ার নাম করে বেশ কিছু টাকা প্রতারণা করা হয়েছে সেই। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই সোমবার তল্লাশিতে যায় পুলিশ। পুলিশ তল্লাশিতে এলাকায় যেতেই চারিদিক থেকে শুরু হয় হইচই। সেই সময় সুযোগ বুঝেই পালিয়ে যায় সাদ্দাম। সাদ্দামের বাড়ির খাটের নিচে একটি সুড়ঙ্গ আছে। যে সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে সাদ্দাম পালিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। পুলিশ আসলে যাতে খবর পেয়েই দ্রুত পালিয়ে যেতে পারে তার জন্য বাড়ির খাটের নিচেতে সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিল। যে সুড়ঙ্গ পার্শ্ববর্তী একটি খালের সঙ্গে সংযোগ। ধৃত দুই মহিলা সাদ্দামের বাড়িতে সদস্য বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার তাদের আলিপুর মহকুমা আদালতে খোলা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.