বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: বামফ্রন্ট সরকারের ভুল ভূমিসংস্কার নীতির জন্য উত্তরের ভূমিপুত্ররা অনেকদিন আগে চাষের জমি হারিয়েছেন। এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) ধাক্কায় অল্পদিনের মধ্যে উদ্বাস্তু হতে চলেছে। কামতাপুর পিপলস পার্টি (কেপিপি) ভোট প্রচারে এই ভাষায় সুর চড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, সিএএ সীমান্ত টপকে ওপার বাংলা থেকে কয়েকদিন আগেও যে মানুষেরা এসে এখানে বসবাস শুরু করেছেন তাদের নাগরিকত্ব দিয়ে সুবিধা ভোগের সুযোগ করে দেবে। কেপিপির শঙ্কা, ওই আইনের জেরে উত্তরের পাহাড়-সমতলে নতুন করে অশান্তি দেখা দিতে পারে।
শুরু থেকেই আপত্তি ও বিরোধিতা ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে গণ ডেপুটেশন দিয়েছে দল। সেই আইন লাগু হতে ক্ষোভে ফুটছে কেপিপি নেতৃত্ব। নির্বাচনের মধ্যে তারা আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণের জন্য আলোচনাও শুরু করেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বর্মন অভিযোগ করেন, বামফ্রন্ট সরকার ভূমিসংস্কার করে গরিব কৃষকদের হাতে জমি তুলে দিলেও জমি কেমন করে চাষ করবে, সার-বীজ-সেচ কোথায় পাবে তার ব্যবস্থা করেনি। ফলে কৃষকেরা জমি ধরে রাখতে পারেনি। দিনমজুরে পরিণত হয়েছে। এবার সিএএ-র ধাক্কায় উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, গরিব দিনমজুর ভূমিপুত্রদের চালচুলো নেই। ওরা কেমন করে নথি দেখাবে? এই আইনে স্থানীয়দের নিরাপত্তা কোথায় দেখা হয়েছে?
সুভাষবাবু বলেন, “সিএএ-র ফলে অনুপ্রবেশকারীরা সুবিধা পাবে। শুধু তাই নয়। এতদিন উত্তরের বাসিন্দাদের মধ্যে যে সদ্ভাব ছিল সেটাও নষ্ট হবে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে।” ইতিমধ্যে বুথ কমিটিগুলোর বৈঠকে কেপিপি নেতৃত্ব তাদের বক্তব্য তুলে ধরে জানিয়ে দিচ্ছেন, তাদের দল বাংলাদেশ থেকে যে মানুষেরা আগে এসেছেন তাদের বিরোধী নয়। কিন্তু যেভাবে ভূমিপুত্রদের উৎখাত করার চক্রান্ত চলছে তার বিরুদ্ধে। কেপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিখিল রায় বলেন, “আমরা ভূমিপুত্রদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই। নথি দেখাতে না পারলে নাগরিকত্ব পাবে না এটা চলবে না। কারণ, গ্রামের গরিব পরিবারের ঘরে কোনও নথি খুঁজেও মিলবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.