সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোন্নগরের কলেজে অধ্যাপক নিগ্রহের ঘটনায় নয়া মোড়। জানা গেল, সেদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হাতে প্রহৃত হয়েছিলেন যে অধ্যাপক, তিনি নিজেই নাকি একসময় শিক্ষক নিগ্রহে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছিল তারকেশ্বরে। যদিও অভিযুক্ত অধ্যাপক নিজে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে নিগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উলটে তাঁর বক্তব্য, পরিকল্পিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে রটনা করা হচ্ছে।
[ আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেমিকার নগ্ন ছবি ছড়ানোর অভিযোগ, গ্রেপ্তার যুবক ]
বুধবার হীরালাল পাল কলেজের অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে রাস্তায় ফেলে মারধর করার অভিযোগ ওঠে টিএমসিপির বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে গত কয়েকদিন ধরেই পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তাঁকে ফোন করে ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ও উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল হীরালাল পাল কলেজে গিয়ে জোড়হাতে ক্ষমা চেয়ে এসেছেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। কিন্তু সম্প্রতি এমন একটি তথ্য উঠে এসেছে যা নিয়ে অধ্যাপকমহলেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২২ বছর আগে প্রহৃত অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় নিজেই একসময় শিক্ষক পিটিয়েছিলেন। ঘটনাটি ঘটে তারকেশ্বরে বহিরখণ্ডে। তখন সুব্রতবাবু ছিলেন সিপিএমের সক্রিয় সদস্য। গ্রামবাসীরা আড়ালে তাঁকে ‘হার্মাদ তৈরির কারিগর’ বলতেন। ১৯৯৭ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন জাতীয় পতাকা তোলা নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। সেই সময় নালিকুল থেকে ফিরছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক মনসারাম ঘোষ। অভিযোগ, মনসাবাবু কংগ্রেস করতেন, তাঁকে বেধড়ক মারতে শুরু করেন সুব্রতবাবু এবং তাঁর দলের লোক। মাটিতে ফেলে জুতোপেটা করা হয় শিক্ষক মনসারাম ঘোষকে। এখন তিনি ক্রাচ নিয়ে হাঁটেন।
ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর অনেকেই বলছেন, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। সেদিন তিনি নিজে শিক্ষকদের সম্মান দেননি। ভাগ্যের চাকা সত্যিই ঘোরে। তাই আজ সেই খাঁড়া তাঁর উপরেই নেমে এল। সেদিনের সেই ঘটনার জন্য ১৫ বছর ধরে মামলা চলে চন্দননগর আদালতে। শেষপর্যন্ত সুব্রতবাবুর পরিবারের অনুরোধেই মামলা তুলে নেন মাস্টারমশাই মনসারাম ঘোষ। এখন তাঁর বক্তব্য, শিক্ষক পেটানো কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়। অধ্যাপক হোক বা প্রাথমিক শিক্ষক, সবাইকে পেটানোই অন্যায়। সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এবার হয়তো সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন।
[ আরও পড়ুন: স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে রুখতে শ্বশুরবাড়ির সামনে এবার ধরনায় বসলেন বধূ ]
যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন অধ্যাপক সুব্রতবাবু। তাঁর মতে, এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল ঠিকই, কিন্তু তাঁর নামে কোনও অভিযোগ হয়নি। কলেজের এই ঘটনার পর এমন ইস্যু যে উঠবে, তা আন্দাজ করেছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, এসব পরিকল্পনা করে তাঁর বিরুদ্ধে রটানো হচ্ছে। এর একটাও সত্যি নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.