প্রতীকী ছবি।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সহায়তার নাম করে বর্ধমান স্টেশন এলাকা থেকে এক তরুণীকে আত্মীয়ের বাড়ি নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ওই তরুণীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার পুলিশ ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।
ধৃতের নাম প্রদীপ জর। বাড়ি কালনা থানার আনুখাল এলাকায়। সোমবার ভোরে মেমারির দেবীপুরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে প্রদীপকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিনই তাকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক ধৃতকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। গত শনিবার থেকে ওই তরুণী নিখোঁজ ছিলেন। কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ওই তরুণী। তাঁর পরিবারের তরফে কলকাতার একবালপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকমাস আগে ওই তরুণীর সঙ্গে মেমারির এক যুবকের বিয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছিল। ওই তরুণীর সেই যুবকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের রাখত। কিন্তু কোনও কারণে পাত্রপক্ষ বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। তা সত্ত্বেও তরুণী সেই যুবকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করত। গত শনিবার বাড়ি থেকে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যায় ওই তরুণী। পরিবারের তরফে পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ওই তরুণী হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে বর্ধমানে চলে আসে। ইচ্ছা ছিল সেই পাত্রের সঙ্গে দেখা করা। কিন্তু কোনওভাবেই যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি। পথচলতি অনেকের কাছ থেকেই মোবাইল নিয়ে ওই যুবককের মোবাইলে ফোন করে ছিলেন ওই তরুণী। কিন্তু তরুণীর গলার আওয়াজ পেলেই ফোন কেটে দেন ওই যুবক।
ফলে মনমরা হয়ে বর্ধমান স্টেশন চত্বরে বসেছিলেন ওই তরুণী। ওই দিন রাতে প্রদীপও বর্ধমানে এসেছিল। তার কাছ থেকেও ফোন চেয়ে ওই যুবককে ফোন করেছিলেন ওই তরুণী। কিন্তু যথারীতি ফোন কেটে দেন ওই যুবক। কাঁদো কাঁদো অবস্থা হয় ওই তরুণীর। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগায় প্রদীপ। ওই যুবকের পৌঁছে দেওয়ার নাম করে রবিবার ভোরে দেবীপুরে আত্মীয় বাড়িতে নিয়ে যায় ওই তরুণীকে। দুপুরের দিকে আবার প্রদীপের ফোন থেকে মেমারির ওই যুবককে জানায় সে দেবীপুরে একজনের কাছে আছে। ওই যুবকের কাছে যাবে বলেও জানায়। ওই তরুণীর কথাবার্তায় কিছু আঁচ করে ওই যুবক বিনয়টি মেমারি থানায় জানান। মেমারি থানার পুলিশ বিভিন্ন সূত্র মারফৎ একবালপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরির বিষয়টি জানতে পারে। খবর পেয়ে তরুণীর পরিবারের লোকজন মেমারি থানায় আসেন। তরুণীকেও আনা হয়।
এরপরই চাঞ্চল্যকর বিষয়টি সামনে আসে। বর্ধমান স্টেশন থেকে নিয়ে যাওয়ার পর প্রদীপ প্রথমে কিছুটা ভালো ব্যবহার করলেও ওইদিন দুপুরের পর তার পাশবিক আচরণ প্রকাশ পায়। তরুণী তার মাকে সব জানায়। ওইদিন দুপুরে প্রদীপ পর পর দুবার ধর্ষণ করে বলে জানায় তরুণী। এর পর তরুণীর মা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ প্রদীপকে গ্রেপ্তার করেন। প্রদীপ পেশায় কালনার একটি বেসরকারি কারখানার কর্মী। বর্ধমান সদর দক্ষিণের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিষেক মণ্ডল জানান, অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নেমে অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। তরুণীর মেডিক্যাল টেস্ট করানো সহ অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া করানোর পরে পরিবারের সঙ্গে তাকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.