সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাগাড়ের মাংসেই জ্যাকপট। এক দানেই কোটিপতি ‘মাংস বিশু’।
কাঁচা মাল কেনার জন্য এক পয়সাও খরচ নেই। শুধু মরা পশু ভাগাড়ে পড়লেই হল। মাংস কেটে ‘প্রসেস’ করে সোজা হিমঘরে। সেখান থেকে শহরের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, হোটেল, আর রেস্তরাঁ। কাকপক্ষীও টের পেত না। ভাগাড়ের পচা মাংসের কারবার করে কয়েক বছরেই কোটিপতি দক্ষিণ শহরতলির গড়িয়ার বিশ্বনাথ ঘোড়ুই। তবে ‘মাংস বিশু’ নামেই অবশ্য বেশি পরিচিত তিনি। বেআইনি ব্যবসা করে দু’হাতে টাকা রোজগার করেছেন বিশ্বনাথ। গড়িয়ার পূর্ব তেঁতুলবেড়িয়ায় বিশাল বাড়ি করেছেন। গড়িয়া স্টেশনের কাছেও ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি। পুলিশের অবশ্য দাবি, সোনারপুরেও আরও ২টি ফ্ল্যাট আছে তাঁর। শুধু তাই নয়, কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় মাংস বিশু জমিও কিনেছেন বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।
[পুরসভার অভিযানে বর্ধমানে নামী রেস্তরাঁয় উদ্ধার পচা মাংস, হতবাক পুরকর্তারা]
ভাগাড় কাণ্ডে সরগরম গোটা রাজ্য। আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়েছে, যে পাঁঠাই বলুন কিংবা মুরগি, মাংস খাওয়ার পাঠ চুকেছে বাঙালির। পুলিশের দাবি, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল, স্টোর, হোটেল ও রেস্তরাঁ পচা মাংস বিক্রি কারবার চালাতেন সোনারপুরের বিশ্বানাথ ঘোড়ুই। এই কারবারের মূল পাণ্ডা তিনিই। বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু, এই বেআইনি কারবারের জাল কতদূর ছড়িয়েছে? এখন সেটাই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তবে বিশ্বনাথের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা দেখে অবশ্য আগেই সন্দেহ হয়েছিল প্রতিবেশীদের। এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, খুব দামি গাড়ি ব্যবহার করতেন বিশ্বনাথ। অনেক রাতে বাড়ি ফিরতেন। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলতেন, চিংড়ি ও মাছের ব্যবসা করছেন তিনি। তদন্তে জানা গিয়েছে, নারকেলডাঙার একটি হিমঘরে মাছ রাখতেন বিশ্বনাথ। মাংসের মতো ওই হিমঘরে রাসায়নিক মিশিয়ে পচা মাছও সংরক্ষণ রাখা হত কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বস্তুত, মাছ ব্যবসা করতে গিয়েই বছর পাঁচেক আগে বিশ্বনাথ ওরফে মাংস বিশু ভাগাড়ের মাংস সন্ধান পায় বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় সানি, সিকন্দর, শরাফতের মতো আরও বেশ কয়েকজনের কয়েকজনের। পুলিশ জানিয়েছে, নারকেলডাঙার ওই হিমঘরটি বিশ্বনাথ ঘোড়ুইয়েরই। ফলে সেখানে কোনও নজরদারি ছিল না। সেই সুযোগেই মাছের মতো রাসায়নিক দিয়ে ভাগাড়ের মাংসও হিমঘরে সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেয় পচা মাংসের এই কারবারি।
[ভাগাড় কাণ্ডে আতঙ্ক, পঞ্চায়েত ভোটের মেনু থেকে বাদ পড়ল মাংস]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.