দীপঙ্কর মণ্ডল ও সৈকত মাইতি: হাতের শিরা কেটে অধ্যক্ষকে অপসারণের প্রতিবাদ! শুক্রবার এমনই নজিরবিহীন প্রতিবাদে শামিল হল কোলাঘাট সরকারি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। রাজ্যের বিভিন্ন পলিটেকনিক কলেজে অধ্যাপক ও অধ্যক্ষদের বদলি করা হয়েছে। সব কলেজেই আন্দোলন শুরু হয়েছে।
[গাছের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে শিশুকে খুনের অভিযোগ, চাঞ্চল্য কর্ণজোড়ায়]
কোলাঘাটে হাতের শিরা কাটার খবর এসেছে কারিগরি শিক্ষা দপ্তরে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন দপ্তর সচিব রোশনী সেন। জানিয়েছেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। এত কমবয়সি ছেলেমেয়েরা কেন এমন আন্দোলন করছে বুঝতে পারছি না। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক খোঁজ নিয়েছেন। বিস্তারিত রিপোর্ট না পেলে কিছু বলা যাবে না।” কোলাঘাট সরকারি পলিটেকনিক, বিপিসি, ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, কন্টাই পলিটেকনিক, এইচ বি ইনস্টটিউট অফ টেকনোলজি অ্যান্ড মাইনিং, মুর্শিদাবাদ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং এসআরএসভি সিউড়ির অফিসার-ইন-চার্জ পদে রদবদল হয়েছে। বেড়াচাঁপার এজেসি বোস পলিটেকনিক ও রায়গঞ্জ পলিটেকনিকের অধ্যাপকদের বদলি করা হয়েছে। এছাড়াও কিছু নতুন কলেজে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অধ্যাপকদের। বদলিতে বেনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যাপকদের একটি বড় অংশ। ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, দায়িত্ব দেওয়ার সময় যোগ্যতা দেখা হয়নি। এই কারণেই তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন বলে জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। প্রিয় শিক্ষক বা অধ্যক্ষের বদলি রুখতে দল বেঁধে প্রতিবাদ প্রথম নয়। কিন্তু কোলাঘাটে যেভাবে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে তা নজিরবিহীন। শনিবার আন্দোলনে শামিল হন অভিভাবকরাও।
[বারুইপুরে বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে]
হাতের শিরা কাটার আগে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে পুনর্বহালের দাবিতে ক্লাস বয়কট করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কোলাঘাটের ছাত্রছাত্রীরা। সরকারি পলিটেকনিক কলেজে এই ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। দাবি পূরণ না হলে আমরণ অনশন আন্দোলনেরও কথা জানিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। এই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন রাজীব বন্দোপাধ্যায়। সম্প্রতি এই পদ থেকে রাজীববাবুকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ আসে। তাঁর জায়গায় ওই কলেজেরই অধ্যাপক সৌমেন সাহাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই তীব্র ক্ষোভ ছড়ায়। ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, পূর্বতন ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক রাজীববাবু সবসময় অভিভাবকের মতোই ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতেন। কলেজের ক্যাম্পাসিং থেকে শুরু করে নানাভাবে তিনি ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করতেন। আচমকাই তড়িঘড়ি তাঁকে এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকলের প্রিয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপককে ফের পদে ফিরিয়ে আনতে হবে। আর তা না হলে তারা আমরণ আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। এবিষয়ে পূর্বতন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রাজীব বন্দোপাধ্যায় জানান, বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশকেই মান্যতা দেওয়া উচিত। তাই ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়ে এই আন্দোলন থেকে সরিয়ে আনতে হবে। এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি সদ্য দায়িত্ব পাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৌমেন সাহা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.