রাজ্যে একের পর এক বিভিন্ন স্কুলে মিড-ডে মিলের বেহাল দশার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। কোথাও আবার দেখা গিয়েছে নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে খুদেদের পেটভরে খাওয়াচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। কী অবস্থা রাজ্যের বাকি স্কুলগুলির? চালচিত্র দেখতে পৌঁছে গেল সংবাদ প্রতিদিন.ইন।
ধীমান রায়, কাটোয়া: স্কুলের ভবন নির্মাণ হয়েছে বহু বছর আগে। তারপর থেকে না হয়েছে সংস্কারের কাজ, না তৈরি হয়েছে নতুন ভবন। ফলে বেহাল ভবনের চাঙর খসতে শুরু করেছে। দুর্ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতেই পঠনপাঠন চলছে পুর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার সরগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখানেই শেষ নয়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই প্রতিদিন মিড-ডে মিল খেতে দেওয়া হচ্ছে পড়ুয়াদের। এই নিয়ে একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, এবিষয়ে একাধিকবার প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও হাল ফেরেনি স্কুলের।
কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের সরগ্রামে ওই একটিই প্রাথমিক বিদ্যালয়। জানা গিয়েছে, স্কুল প্রতিষ্ঠার পর মাটির ঘরে শুরু হয়েছিল ক্লাস। তারপর ১৯৭০–৭১ সাল নাগাদ গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় স্কুলের একতলা ভবনটি তৈরি হয়। পরে ২০০৭ সালে সর্বশিক্ষা মিশনের অনুদানে পৃথক একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ১৬৭ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে ওই বিদ্যালয়ে। রয়েছেন ৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। সরগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “একসময় গ্রামবাসীদের উদ্যোগে তৈরি ভবনে এ যাবৎ সংস্কারের কাজ তেমনভাবে হয়নি। নতুন ভবনের জন্য সরকারি অনুদানও মেলেনি। বিপজ্জনক অবস্থা হয়েছে শ্রেণিকক্ষগুলির। তারই মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে।”
প্রধান শিক্ষক জানান, একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে। ছবি-সহ ভবনের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। কিন্তু তাও স্কুল ভবনের জন্য অনুদান বরাদ্দ হয়নি।তাঁর কথায়, এক সপ্তাহ আগেও জেলা পরিষদে কাছে আবেদন করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, স্কুলের এই পরিস্থিতি দেখে বাধ্য হয়ে ব্লক প্রশাসনের তরফে মিড-ডে মিলের জন্য একটি ছোট ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই ঘরে ২০-২২ জন পড়ুয়ার বেশি একসঙ্গে বসতে পারে না।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, “স্কুলের এই ভবনের মধ্যেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও চলে। বছর তিনেক আগে এক শিশুকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন এক মহিলা। সেই সময় তাদের মাথায় চাঙর ভেঙ্গে পড়ে। আর এখনতো প্রায়শই বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়ছে।” তাঁদের কথায়, সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে থাকেন তাঁরা। কারণ, যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বিপদ। এবিষয়ে কথা বলা হলে কাটোয়ার মহকুমা শাসক বলেন, “আমার সঠিক জানা নেই। তবে অবিলম্বে খোঁজ নিয়ে দেখব।” কতদিনে সমাধান মিলবে এই সমস্যার, সেই অপেক্ষায় সকলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.