Advertisement
Advertisement
Simlapal Rajbari Puja

Durga Puja 2022: এক সময়ে শয়ে শয়ে ছাগল বলি হত, এখন কীভাবে পুজো হয় সিমলাপাল রাজবাড়িতে?

প্রায় চারশো বছরের পুরনো বাঁকুড়ার এই রাজবাড়ির দুর্গাপুজো।

Know the greatness Simlapal Rajbari Durga Puja 2022 | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:September 20, 2022 4:42 pm
  • Updated:September 20, 2022 4:42 pm  

দেবব্রত দাস, খাতরা: প্রায় চারশো বছরের পুরনো বাঁকুড়ার সিমলাপাল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো (Simlapal Rajbari Durga Puja)। অজস্র ইতিহাস লতানো গাছের মতো জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোর সঙ্গে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল বলির রক্তাক্ত ইতিহাস। শতাধিক ছাগলের বলি হত এই রাজবাড়িতে। যা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ‘আর পশুবলি নয়’- এই বার্তাই এখন দিচ্ছেন রাজবাড়ির সদস্যরা। 

Durga-Puja-Simlapal-Rajbari-1

Advertisement

কথিত আছে, সিমলাপাল থেকে কুইলাপাল পর্যন্ত বিস্তীর্ণ মৌজা ছিল এই রাজ পরিবারের অধীনে। সিমলাপাল রাজ পরিবারের শেষ রাজা ছিলেন শ্যামসুন্দর সিংহ চৌধুরী। তাঁর তিন ছেলে। বড় ছেলে কল্যাণীপ্রসাদ সিংহ চৌধুরী ১৯৮৪ সালে পথ দুর্ঘটনায় মারা
গিয়েছেন। মেজো ছেলে অমিয়প্রসাদ সিংহ চৌধুরী বিদেশে থাকেন।

শ্যামসুন্দর সিংহ চৌধুরীর ছোট ছেলে দেবপ্রসাদ সিংহ বড়ঠাকুর সিমলাপালেই থাকেন। তিনি বলেন, পঞ্জিকার নিয়ম মেনে পুজোর যাবতীয় আচার অনুষ্ঠান হয়। পশুবলির প্রথা মানা সম্ভব হয়নি। তাঁর কথায়, “আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা দেবীমূর্তির সামনে পশুবলি চড়াতেন। দেবীমূর্তির সামনে বলি হত শতাধিক ছাগশিশু। সেই বলির প্রথা আজ বন্ধ। পশুবলি বন্ধ করে কুসংস্কার দূর করার চেষ্টা করছি আমরা। একই সঙ্গে এই পশুবলি বন্ধ করার জন্য সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।”

[আরও পড়ুন: স্বপ্নাদেশেই বদলে যায় দেবীর রূপ, বনগাঁর দত্তবাড়িতে মা বিরাজ করেন ‘বিড়াল হাতি’ রূপে]

দেবপ্রসাদবাবু জানান, সপ্তমীর দিন ৩টি ছাগল, ৩ টি কুমড়ো, অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় ১১ টি ছাগল, ছাঁচি কুমড়ো ও আখ এবং নবমীর দিন ৫ টি করে ছাগল, ছাঁচি কুমড়ো ও আখ বলি দেওয়া হত। এছাড়াও এলাকার বহু মানুষের মানত করা শতাধিক ছাগল বলি দেওয়া হত। অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় বিষ্ণুপুরের মল্লরাজাদের তোপধ্বনির পরে এখানেও তোপ দাগার রেওয়াজ ছিল। এখন ছাগল বলির বদলে আখ ও ছাঁচি কুমড়ো বলি দেওয়া হয়।

Durga-Puja-Simlapal-Rajbari-2

কেন এই বলি প্রথা বন্ধ করলেন? প্রশ্নের উত্তরে শ্যামসুন্দরবাবুর নাতি চিরঞ্জীব সিংহ চৌধুরী বলেন, “দাদু কখনও পশুবলি প্রথাকে সমর্থন করতেন না। দাদু চাইতেন এই পশুবলি বন্ধ হোক। মৃত্যুর আগে আমার বাবাকে দাদু বলে গিয়েছিলেন, এই পশুবলির প্রথা তুলে দিতে। দাদুর মৃত্যুর পর আমরা তাই এই পশুবলি প্রথা বন্ধ করে দিয়েছি। পশুবলি একটা কুসংস্কার।
প্রতিটি পুজোর উদ্যোক্তারা পশুবলি প্রথা আগামী দিনে বন্ধ করবেন এই আবেদন জানাচ্ছি।”

পশুবলি না হলেও ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত সিমলাপাল রাজবাড়িতে আজও জাঁকজমক সহকারে দুর্গাপুজো হয়। সপ্তমীর সকালে শিলাবতী নদী থেকে শোভাযাত্রা সহকারে ঘট ও নবপত্রিকা আনা হয়। তবে এখানে আখ বলির ধরনটা একটু অন্য রকম। দেবীর থানে
ত্রিভূজের আকারে আখগুলি দাঁড় করানো হয়। তারপর বলি দেওয়া হয়। পুজোর দিনগুলিতে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এখনও আশেপাশের বহু গ্রামের মানুষ পুজো দেখতে আসেন।

[আরও পড়ুন: ‘পথের পাঁচালী’ থেকে ‘গুপি বাঘা’, সত্যজিৎ রায়কে অভিনব শ্রদ্ধার্ঘ্য বাগনানের এই পুজোয়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement