ছবি: প্রতীকী
দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনা আবহে পরীক্ষা বাতিল। রাজ্যের স্কুলস্তরের দুই বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক (Madhyamik) ও উচ্চমাধ্যমিক (Higher Secondary) এ বছরও হবে না। বদলে পড়ুয়াদের মূল্যায়নে বিকল্প পথ বেছে নিয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ ও উচমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। শুক্রবারই দুই বোর্ডের সভাপতিরা ঘোষণা করে দিয়েছেন এই পদ্ধতি। পরীক্ষাহীন অবস্থায় পড়ুয়াদের মার্কশিট দিতে রীতিমতো জটিল অঙ্কের সাহায্য নিতে হচ্ছে বোর্ডকে। মূল্যায়ন যাতে যথাযথভাবে, সবদিক বজায় রেখে করা যায়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। আসুন, বুঝে নেওয়া যাক, কোন সমীকরণে তৈরি হবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াদের মার্কশিট –
মাধ্যমিকের মূল্যায়ন পদ্ধতি:
মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ৫০ শতাংশ এবং দশম শ্রেণির অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের (Internal Assessment) ৫০ শতাংশ নম্বর যোগ করে তৈরি হবে মার্কশিট। ওই নম্বরে সন্তুষ্ট না হলে পরীক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তবেই নেওয়া হবে পরীক্ষা। ওই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে দেওয়া হবে চূড়ান্ত মার্কশিট।
উচ্চমাধ্যমিক মূল্যায়ন পদ্ধতি:
উচ্চমাধ্যমিকের মার্কশিট তৈরির ক্ষেত্রে তিন ধাপে নম্বর দেওয়া হবে –
১. ধাপ A – ২০১৯ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাই যেহেতু এ বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, তাই তাদের মাধ্যমিকের ফলাফল থেকে কিছু নম্বর যোগ করা হবে। সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস জানিয়েছেন, মাধ্যমিকে যে চারটি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি নম্বর রয়েছে, তা বেছে নম্বর যোগ করে, তার ৪০ শতাংশ নম্বর নেওয়া হবে। মার্কশিটে নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রথম ধাপের নম্বর সেটাই। এই নম্বর প্রতিটি বিষয়ের ক্ষেত্রে একই থাকবে। অর্থাৎ ধাপ A’র নম্বর স্থায়ী।
২. ধাপ B (যে সব বিষয় ল্যাবরেটরিতে প্র্যাকটিক্যাল হয়) – একাদশ শ্রেনির বার্ষিক পরীক্ষায় থিওরির মোট নম্বরের ৬০ শতাংশের উপর নম্বর দেওয়া হবে। অর্থাৎ মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে থিওরি যদি ৭০ নম্বরের হয়, তাহলে তার ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ৪২ নম্বরের মধ্যে পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর বিবেচিত হবে।
৩. ধাপ C (যে সব বিষয় ল্যাবরেটরিতে প্র্যাকটিক্যাল হয়) – বাকি থাকছে ৩০ নম্বরের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা। দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাকটিক্যালে যে নম্বর পাবে পড়ুয়া, সেই নম্বরের পুরোটা যোগ হবে।
এই তিন ধাপ অর্থাৎ A,B,C তিনটি নম্বর যোগ করে একেকটি বিষয়ের মোট প্রাপ্ত নম্বর বসানো হবে মার্কশিটে।
যে সব বিষয়ে ল্যাবরেটরিতে প্র্যাকটিক্যাল নেই, সেই বিষয়ের থিওরি ৮০ নম্বরের এবং প্রজেক্ট ওয়ার্ক ২০ নম্বরের। এক্ষেত্রে ৮০র মধ্যে ৬০ শতাংশ নম্বরের উপর পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর হিসেব হবে এবং ২০ নম্বরের মধ্যে যা পাবে, তার পুরোটাই যোগ হবে। সেক্ষেত্রে ধাপ A একই রকম থাকবে। ধাপ B এবং C’র হিসেব কিছুটা বদলে যাবে। এভাবেই একেকটি বিষয়ে পড়ুয়াদের প্রাপ্ত নম্বর বসবে মার্কশিটে। নিঃসন্দেহে এই অঙ্ক বেশ জটিল। এই প্রথমবার পরীক্ষাহীন অবস্থায় পড়ুয়াদের মূল্যায়নের বিকল্প পদ্ধতি ভেবেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.