Advertisement
Advertisement

Breaking News

এক কেজি তক্ষকের মাংস ১০ হাজার ইউরো!

পাচারচক্রের নেপথ্যে কেএলও, আলফা, বাংলাদেশের জামাতের মতো জঙ্গি সংগঠন, অনুমান গোয়েন্দাদের৷

KLO, ALFA, Jamaat terror groups behind the Gecko Poaching in North Bengal!
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 27, 2016 10:59 am
  • Updated:October 27, 2016 10:59 am  

ব্রতীন দাস ও বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: অনলাইনে কারবার৷ সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে সংকেতে জানানো হচ্ছে বাজার দর৷ মায়ানমার, নেপাল ও ভুটানে ঘাঁটি গেড়ে এজেন্সি খুলে চলছে কারবারের তদারকি৷ এই তথ্য বন দফতরের হাতে আসতেই প্রশ্ন উঠেছে –এজেন্সিগুলির আড়ালে কে!

দাম জানাতে চোরাকারবারিরা ‘ব্যাক ওয়াটার রেপটাইলস ডট কম’ নামে ‘ই-মেল আইডি’ খুলেছে৷ মায়ানমার, নেপাল ও ভুটানে ঘাঁটি গেড়ে যে সমস্ত এজেন্সি টাকা ছড়িয়ে ক্যারিয়ারের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গল থেকে তক্ষক সংগ্রহ করছে, তাদের কাছে রয়েছে ‘পাসওয়ার্ড’৷ এজেন্সিগুলি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে নিয়মিত বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাচ্ছে–‘টোকে গেকো ফর সেল৷ বাই এ গেকো এ লাইভ অ্যারাইভাল গ্যারাণ্টি’৷ এক কেজি তক্ষকের মাংস ব্যাঙ্কক, তাইল্যান্ড, হংকং, তাইওয়ান, ফিলিপাইন অথবা মালয়েশিয়ার বাজারে পৌঁছে দিতে পারলেই মিলছে ১০ হাজার ইউরো৷

Advertisement

সবটাই কি আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের কাজ! নাকি অন্য কোনও গোষ্ঠী অর্থ রোজগারে নেমেছে! প্রশ্ন অনেক৷ কিন্তু উত্তর খুঁজতে কালঘাম ছুটছে গোয়েন্দাদের৷ উঠে এসেছে কেএলও এবং আলফা-র মতো জঙ্গি সংগঠনের নাম৷ অপহরণ, খুন, ফোনে ধমকে-চমকে অর্থ রোজগারের রাস্তা বন্ধ হতেই কি ‘কার্বি পিপলস লিবারেশন টাইগার’-এর সঙ্গে জোট বেঁধে পাচারের শুরু করেছে কেএলও? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন৷

সেইসঙ্গে উত্তরের বন্যপ্রাণ  পাচারে মিলছে বাংলাদেশের যোগ৷ জামাত অর্থ জোগাচ্ছে বলেও খবর এসেছে গোয়েন্দাদের কাছে৷ এদিকে, উত্তরের জঙ্গল থেকে দেদার হরিণ শিকার করে তার শিং পাচার হয়ে যাচ্ছে অসম, ভুটান ও চিনে৷ মিলেছে সেই তথ্যও৷ মূলত মেচ-রাভা ও আদিবাসীদের দিয়ে হরিণ শিকার করানো হচ্ছে৷ তার পর তার শিং কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে পাচারকারীরা৷ টোটোপাড়া হয়ে ভুটানে পাচারের একটি রুটের হদিশ মিলেছে৷ আবার ভলকা-বরোভিসা হয়ে কুমার দিয়ে পাচার হচ্ছে অসমেও৷

সূত্রের খবর, মায়ানমারে বসে ভেঙে পড়া সংগঠনকে ফের চাঙ্গা করতে মরিয়া কেএলও সুপ্রিমো৷ জঙ্গি নেতারা ঘুরে বেড়াচ্ছে ব্যাংকক, তাইল্যান্ড, তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া৷ সেপ্টেম্বরের গোড়ায় রকেট প্রপেলড গ্রেনেডের মতো অস্ত্রের বরাত দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু স্বয়ংক্রিয় ওইসব অস্ত্র কিনতে কোটি কোটি টাকা প্রয়োজন৷ অর্থের উৎস কী–প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তক্ষক, হাতির দাঁত, গন্ডারের খড়গ, ভালুকের পিত্ত পাচারের ঘটনায় জঙ্গি যোগসূত্র স্পষ্ট হতে শুরু করেছে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যেভাবে দ্রুত জাল ছড়াচ্ছে চোরাশিকারিদের, তাতে আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷

গন্ডারের খড়গের মতো তক্ষক পাচার নিয়ে হইচই শুরু হতে বন দফতর সহ বিভিন্ন এজেন্সির অনুসন্ধানে যে তথ্য সামনে এসেছে, তা হল মায়ানমার, ভুটান এবং নেপাল হয়ে বিদেশের বাজারে পাচার হচ্ছে বন্যপ্রাণজাত সামগ্রী৷ জঙ্গিরা আন্তর্জাতিক পাচারকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বেনামি এজেন্সির আড়ালে থেকে কারবার শুরু করেছে কি না সেটাই এখন খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন গোয়েন্দারা৷ কারণ, জঙ্গি গোষ্ঠী শুধুমাত্র আত্মগোপন এবং অস্ত্র সংগ্রহের জন্য মায়ানমার, নেপাল ও ভুটানকে বেছে নেয়নি সেটা স্পষ্ট৷ অমূল্য বন্যপ্রাণ পাচারের কাজে হাত পাকিয়ে অনেকটাই নিরাপদে অর্থ রোজগারের পথ খুঁজে নেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়৷

অসম জুড়ে সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরু হতে খানিকটা কোমর ভেঙে গিয়েছে আলফা জঙ্গি সংগঠনের৷ একসময় সংগঠনে অর্থের জোগান ছিল অপহরণ, লুঠপাট থেকে৷ তা এখন সম্ভব হচ্ছে না৷ কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে অর্থ চাই৷ ফলে আলফা জঙ্গিদেরও তহবিল তৈরিতে নামাটাও অসম্ভব নয় বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement