নিজস্ব সংবাদদাতা, বোলপুর: জপেশ্বর শিবমন্দির প্রাঙ্গণ। চারিদিকে হাপুস-হুপুস শব্দ। মহামোচ্ছবে খাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। খিচুড়ি, টকের পর পাতে পড়েছে পায়েস। মেনু অনুসারে এবার পাতে বোঁদে পড়ার কথা। কিন্তু তার পরিবর্তে এল কীর্ণাহারের বিখ্যাত বড় সাদা রসগোল্লা। কিছু বলার আগেই পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, বাংলা রসগোল্লাতে পেটেন্ট পেয়েছে। তাই এবার বোঁদের পরিবর্তে রসগোল্লা। মোচ্ছব খেতে আসা হাজার হাজার মানুষের মুখে তখন খুশির ঝলক। বাংলার এই গৌরবকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতে ২২ হাজার মানুষকে রসগোল্লা খাওয়ানো হল কীর্ণাহারে।
দীর্ঘ লড়ায়ের পর বাংলার বিখ্যাত মিষ্টি রসগোল্লায় সম্প্রতি পেটেন্ট পেয়েছে রাজ্য। সারা রাজ্য জুড়ে এই নিয়ে বিভিন্ন আনন্দ উৎসব হয়েছে। কিন্তু কীর্ণাহারে রাজ্যের এই গৌরবকে অন্য ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করে জপেশ্বর মেলা কমিটি। সিদ্ধান্ত হয় ২২ হাজার রসগোল্লা তৈরি করা হবে। খাওয়ানো হবে সাধারণ মানুষকে।
[ আন্দোলনে কিছুটা সুর নরম উপাচার্যের, ৯ জনকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ]
প্রসঙ্গত, গত শিব চতুর্দশীর দিন থেকে কীর্ণাহারের জপেশ্বর শিব মন্দির প্রাঙ্গণে মেলা বসেছে। বৃহস্পতিবার তার শেষ দিন। দীর্ঘ দিনের প্রথা অনুসারে মেলার শেষ দিনে ২০-২৫ হাজার মানুষ মোচ্ছব খান। আর এর প্রস্তুতি চলে এক সপ্তাহ ধরে। স্থানীয় মালঞ্চ ক্লাব এবং মেলা কমিটির উদ্যোগে কীর্ণাহার ছাড়াও আশেপাশের ৩০-৩৫টি গ্রামের মানুষের কাছে সাহায্য নেওয়া হয়। কেউ চাল দেন তো কেউ আলু। আবার অনেকে টাকাও দেন। দীর্ঘদিনের প্রথা অনুসারে মোচ্ছবের খাদ্য তালিকায় থাকে খিচুড়ি, টক, পায়েস আর বঁদিয়া। কিন্তু এবার বঁদিয়ার পরিবর্তে রসগোল্লা করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। কারণ রসগোল্লায় বাংলা পেটেন্ট পেলেও কীর্ণাহারের রসগোল্লা বাংলা বিখ্যাত।
[ মন্দির নির্মাণে স্থানীয়দের বাধা, বিগ্রহ কোলে এসডিও-র অফিসে বৃদ্ধা ]
গত তিন দিন ধরে এই রসগোল্লা তৈরির কাজ শুরু হয়। সাড়ে সাত কুইন্টাল ছানা এবং সাড়ে আট কুইন্টাল চিনি সহযোগে ৩৫ জন কারিগর এই রসগোল্লা তৈরি করেন। এদিকে এদিন ভক্তদের পাতে রসগোল্লা দিয়ে মোচ্ছবের উদ্বোধন করেন ভূমিপূত্র তথা কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। এদিকে খাদ্য তালিকায় এই পরিবর্তন নিয়ে মোচ্ছবে খেতে আসা ভক্ত সাধন মণ্ডল বলেন, এবার বঁদিয়ার পরিবর্তে রসগোল্লা। কমিটির উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। মেলা কমিটির পক্ষ থেকে জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, বাংলা রসগোল্লায় পেটেন্ট পেয়েছে। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মোচ্ছবে ২২ হাজার রসগোল্লা করা হবে। তাই রসগোল্লা খাইয়ে আমরা বাংলার সাফল্যকে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরলাম। এই বিষয়ে সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাংলার মাছের ঝোল-ভাত যেমন জীবনের অঙ্গ, তেমনই রসগোল্লা। এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.