সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: সচেতনতামূলক প্রচারই সার। সাপে কাটা রোগীকে ডাক্তারের বদলে নিয়ে যাওয়া হল ওঝার কাছে। সেখানে ওঝার কেরামতি, ঝাড়ফুঁক। শেষপর্যন্ত কার্যত বিনা চিকিৎসায় অকালে ঝরে গেলে একটি প্রাণ। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে মৃত্যু হল বছর পনেরোর সোমা সিংহের। ওঝার কাছে না নিয়ে তাদের কাছে আনা হলে সোমাকে বাঁচানো যেত বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
[ছেলে-বৌমার অত্যাচারে বাড়ি হারিয়ে এখন পথে পথে এই দম্পতি]
ঝাড়গ্রামের চন্দ্রি গ্রামের বাসিন্দা সোমা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে রবিবার সন্ধ্যে ছটা নাগাদ সোমা স্থানীয় হাট থেকে বাড়ি ফিরছিল। এমন সময় তাকে সাপে কামড়ায়। অভিযোগ প্রচন্ড যন্ত্রণা শুরু হলেও সোমাকে হাসপাতালে ভর্তি করার কথা একবারও ভাবেননি তার পরিজনরা। ওই কিশোরীকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় মুদি দোকানদার তথা ওঝা শিবব্রত সিংহের কাছে। শিবব্রত ব্যবসার পাশাপাশি গৃহশিক্ষকতা করেন। ওঝা শুরু করেন কেরামতি। জলপোড়া খাওয়ানো হয় সোমাকে। চলে তুকতাক। সোমার পরিবারকে জানান মেয়ে ভাল আছে। কিন্তু রাতের দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ওই কিশোরীকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। ভর্তি করা হয় সিসিইউতে। ততক্ষণে সোমার অবস্থা শেষ। পরের দিন মারা যায় ওই কিশোরী।
[দেশের প্রথম মহিলা স্টেশন ডিরেক্টরের দায়িত্বে খড়গপুরের সোনালি]
চোখের সামনে মেয়ের এই পরিনতিতে ভেঙে পড়েছে সিংহ পরিবার। সোমার বাবা পাগলু সিংহ বলেন, গ্রামের কাউকে সাপে কাটলে তারা ওঝা শিবব্রতের কাছে নিয়ে যান। সেই ভেবে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে গ্রামবাসীদের দাবি ঘটনার পর তারা সোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পাগলু সিংহ কথা কানে আনেননি। কিশোরীর মৃত্যু প্রসঙ্গে হাসপাতালের সুপার মলয় আদক জানান, অনেক দেরিতে রোগীকে আনা হয়েছিল। এসব ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি রোগীকে আনা যায় তত বাঁচার সম্ভাবনা বাড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.