Advertisement
Advertisement
Khardah Murder,

তৃতীয়বার বিয়ের পথে বাধা হওয়াতেই প্রাক্তন স্বামীকে খুন করে অদিতি!

খড়দহে প্রৌঢ় খুনে বারবার বয়ান বদল অভিষুক্তের।

Khardah Murder takes new turn - Aditi murders her ex-husband
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:December 24, 2018 8:13 pm
  • Updated:March 29, 2019 12:04 pm  

আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: তৃতীয়বার বিয়ের ক্ষেত্রে বাধা হওয়ার জন্যই কি খুন হতে হল অদিতির প্রাক্তন স্বামীকে? খড়দহে প্রৌঢ় খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। জানা গিয়েছে, প্রতুল চক্রবর্তীয় সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নতুন করে জীবন শুরু করতে চাইছিল অদিতি। সঙ্গে ছিল ১৫ বছরের ছেলে। তার মাথায় অভিভাবকের আশ্রয় দেওয়ার জন্যই ম্যাট্রিমনি সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল অদিতি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তৃতীয়বার বিয়ে প্রায় পাকাই ছিল অদিতির। কিন্তু বাদ সাধে প্রাক্তন স্বামী প্রতুল। অদিতির বরের সঙ্গে দেখাও নাকি করেন তিনি। তাঁকে প্রতুল বলেন, অদিতির সঙ্গে বিচ্ছেদ এখনও আইনিভাবে হয়নি। একথা জানতে পেরেই প্রাক্তন স্বামীকে দুনিয়া থেকে সরানোর ছক কষে ওই মহিলা। বোঝাই যাচ্ছে, ছক কষেই প্রতুলকে পৃথিবী থেকে সরিয়েছে অদিতি।

প্রাক্তন স্বামীকে খুনের কথা কবুল করেছিল স্ত্রী। জানিয়েছিল, “প্রমাণ লোপাট করতে মোবাইল ফোন খালে ফেলে দিয়েছি।” কিন্তু খুনের সঠিক মোটিফ কী? আপাতত সে প্রশ্নেরই উত্তর জানতে দুটো মোবাইলের উপর ভরসা করছেন তদন্তকারীরা! শনিবার গভীর রাতে সিঁথি থেকে পুলিশ অদিতি এবং তাঁর স্বামী প্রতুলের একটি মোবাইল উদ্ধার করেছে। পুলিশের অনুমান, ওই মোবাইল দুটির কললিস্ট ঘেঁটে নতুন তথ্য মিলতে পারে। যদিও প্রতুলের আই ফোনটি এখনও পুলিশ খুঁজে পায়নি। ধৃত অদিতি ওই আই ফোনটি খালে ফেলে দেবার কথা বললেও, পুলিশ তা মানতে নারাজ। এদিকে অদিতি বারংবার বয়ান বদল করছে। একেক সময় একেক রকম তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে খড়দহ থানার তদন্তকারী অফিসারদের।

Advertisement

[ফেসবুকে আসক্তি, পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা যুবকের]

গ্রেপ্তার হওয়ার পর অদিতির কাছ থেকে আরও একটি মোবাইল পুলিশ উদ্ধার করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ফোন দুটি সিঁথিতে একজনের কাছে বিক্রি করতে দিয়েছিল অদিতি। প্রাক্তন স্বামী প্রতুল খুনে অভিযুক্ত অদিতির উদ্ধার হওয়া ফোনটি ছিল পুরোপুরি ব্যক্তিগত ও অত্যন্ত গোপনীয়। ওই ফোনের নম্বর সবাই জানতেন না। শুধুমাত্র তার অতি পরিচিতি লোকজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য অদিতি ওই ফোনটি ব্যবহার করতেন। পুলিশের অনুমান, খুনের দিন কিছু একটা ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার জেরেই প্রাক্তন স্বামীকে খুন করেছে অদিতি। তাছাড়া ঘটনাস্থলে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি উপস্থিতি থাকার বিষয়টিও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে খড়দহ থানার পানিহাটি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাঠপোলের কাছে শান্তিনগরে প্রাক্তন স্বামী প্রতুল চক্রবর্তীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল বিমানবন্দরের কর্মী অদিতি চক্রবর্তী। খুন করার পরেও একটু ভেঙে পড়েনি সে। পরদিন ভোরে পানিহাটি থেকে বেরিয়ে কাশীপুর বিটি রোড সংলগ্ন ফ্ল্যাটে গিয়েছিল। সেখান থেকে অফিস। কিন্তু ঘটনাস্থলে রুমালটা ফেলে যাওয়াই কাল হয় তার। সেই রুমালের সূত্র ধরেই পুলিশ অদিতিকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘরটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। ফরেনসিক টিম এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞ দিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশি জেরায় ধৃত অদিতির বয়ান অনুযায়ী খুনের পিছনে একাধিক কারণ সামনে আসছে। একেক সময় তিনি খুনের একেক রকম কারণ বলছেন। প্রথমত, প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল প্রতুলের। বয়ান অনুযায়ী তাই নিয়েই খুনের দিন রাতে তীব্র অশান্তি বেধেছিল। অদিতির দাবি, সেই সময় প্রতুল নাকি তাকে মারার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা প্রতুলকে সে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে মুখে বালিশ চেপে ধরে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে কাপড়ের পাড় ছিঁড়ে নিয়ে প্রাক্তন স্বামীর গলায় পেঁচিয়ে টেনে ধরে।

[বিয়েতে রাজি নয় পছন্দের তরুণী, দুঃখে নিজের যৌনাঙ্গে কোপ মারল যুবক]

দ্বিতীয় বয়ান অনুযায়ী, অদিতি ফের বিয়ের জন্য ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। তাতেই রেগে যান প্রাক্তন স্বামী। অদিতির দাবি, পুরনো সম্পর্ক জোড়া লাগাতে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করেছিলেন প্রতুল। তাতেই প্রতুলের উপর তার আক্রোশ জন্মেছিল। অদিতির এই একাধিক বয়ানে বিভ্রান্ত হয়ে খুনের রহস্য উদ্ঘাটনে তাৎক্ষণিক ঘটনা অনুসন্ধানে জোর দিচ্ছেন তদন্তকারীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement