আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: খড়দহে প্রৌঢ় খুনের ঘটনায় নয়া মোড়। খুনের অভিযোগে ধৃত প্রাক্তন স্ত্রী অদিতি চক্রবর্তীর বয়ান বদলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল শনিবার। এদিন খুনের ঘটনার পুনর্নিমাণের জন্য খড়দহের শান্তিনগরের খালপাড়ের ওই ভাড়াবাড়িতে অদিতিকে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানেই অদিতি দেখায় কীভাবে গত বুধবার রাতে প্রাক্তন স্বামীকে খুন করে সে। তখনই সে জানায়, বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে প্রতুল চক্রবর্তীকে। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে শাড়ির পাড় দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। শুধু তাই নয়, সেদিন রাতে প্রাক্তন স্বামীর মৃতদেহের পাশেই শুয়েছিল অদিতি। তারপর বৃহস্পতিবার ভোরে প্রমাণ লোপাট করতে প্রতুলবাবুর দুটি মোবাইল ফোন এবং কিছু জরুরি কাগজপত্র খালের জলে ফেলে দিয়ে তারপর কাশীপুরে নিজের ফ্ল্যাটে ফেরে সে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রতুলবাবুর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে অদিতি। প্রাক্তন স্বামীর অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে ফের বিয়ে করার কথা ভাবে সে। একটি ম্যাট্রিমনি সাইটে বিজ্ঞাপনও দেয় অদিতি। সেইকথা জানতে পেরে প্রতুলবাবু নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। খুনের রাতে অদিতিকে ফোন করে তিনিই খড়দহে আসতে বলেন। রহড়াবাজারে বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রাক্তন স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন প্রতুল চক্রবর্তী। তারপর বাড়িতে নিয়ে এসে অদিতির পাওনা ১৪ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথাও নাকি বলেন। তারপর আকণ্ঠ মদ্যপান করে প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে যৌন মিলনের চেষ্টা করেন ওই প্রৌঢ়। অনিচ্ছুক প্রাক্তন স্ত্রী তাঁকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। তখন অচৈতন্য প্রাক্তন স্বামীকে চিরতরে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে অদিতি। বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে তাঁকে। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে শাড়ির পাড় দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। সবশেষে বিছানায় দেহ ফেলে রাখে।
[রুমাল ও হোটেলের বিলের সূত্র ধরে রহস্যের কিনারা, খড়দহে প্রৌঢ় খুনে গ্রেপ্তার প্রাক্তন স্ত্রী]
বৃহস্পতিবার কাকভোরে প্রমাণ লোপাট করতে প্রতুলবাবুর দুটি মোবাইল ফোন এবং কিছু জরুরি কাগজপত্র নিজের ব্যাগে ভরে খালের কাছে যায় অদিতি। খালে সবকিছু ফেলে দিয়ে তারপর অটোরিকশায় করে সোদপুর স্টেশনে পৌঁছায় সে। সেখান থেকে কাশীপুরে নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে ফ্রেশ হয়ে ফের এয়ারপোর্টে কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে রওনা হয় অভিযুক্ত। আগের জবানবন্দির সঙ্গে এদিনের স্বীকারোক্তির কোনও মিল ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে খুন কি অদিতি একাই করেছে নাকি নেপথ্যে রয়েছে তৃতীয় কেউ, সেই নিয়ে ধন্দে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত চলছে।
[বিছানায় পড়ে গলায় ফাঁস দেওয়া দেহ, প্রৌঢ়ের রহস্যমৃত্যুতে খড়দহে চাঞ্চল্য]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.