ছবি: প্রতীকী
অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: স্বামীকে নিয়ে বড় জায়ের সঙ্গে মতবিরোধ। তার জেরে দেড় বছরের শিশুপুত্রকে শ্বাসরোধ করে খুন। তারপর মৃত ছেলেকে কোলে নিয়ে থানায় পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়ল খুনে মা। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুরের কাঁটাবেড়িয়া গ্রামে।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত গৃহবধূর নাম কাজল হেমব্রম। মৃত শিশুসন্তানের নাম জিৎ হেমব্রম। স্বামী বাপি হেমব্রম স্ত্রী ও সন্তানকে পাত্তাই দেন না। কাজ থেকে ফিরে বাকি সময়টা দাদা বউদির সঙ্গেই কাটিয়ে দেন। দীর্ঘদিন ধরে একই ঘটনা ঘটতে থাকায় অভিমান জমছিল কাজলদেবীর মনে। স্বামীকে বলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। তাই বড় জা সম্ভারী হেমব্রমের কাছে অনুযোগ করে ওই গৃহবধূ। ভেবেছিল সমাধান বাতলে দেবেন বড় জা। তবে তা ঘটেনি। অভিযোগ, উলটে গৃহবধূকে যাচ্ছেতাই করে কথা শোনান বড় জা। শেষে স্বামীকে কেড়ে নেওয়ারও হুমকি দেন। এমনিতেই স্বামীর আচরণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল কাজলদেবী। বড় জায়ের কথায় তা আতঙ্কের পর্যায়ে পৌঁছায়। স্বামী তাদের ছেড়ে গেলে শিশুপুত্রকে নিয়ে অথৈ জলে পড়তে হবে।বুঝতে পেরে আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে মা-হারা বাচ্চার কী হবে, তা নিয়ে বিশেষ চিন্তিত ছিল ওই গৃহবধূ। অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করে, ছেলেকে মেরে নিজে মরবে। তাতে কারওর প্রতি আর দায়বদ্ধতা থাকবে না। তাই শ্বাসরোধ করে প্রথমে একরত্তি ছেলেকে খুন করে।পরে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ঘরের নিচু চালে আত্মঘাতী হওয়া সম্ভব নয়। বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর বিধ্বস্ত গৃহবধূ মৃত ছেলেক কোলে নিয়ে অটোয় চেপে বসে। খড়গপুর গ্রামীণ থানায় এসে জানায়, ছেলেক খুন করেছে।কাঁদতে কাঁদতেই বলে, ছেলেকে মেরে ফেলেছি। তবে স্বামীর সঙ্গে অশান্তির খবর নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি অভিযুক্ত গৃহবধূ। এরপর স্বামী বাপি হেমব্রমের অভিযোগের ভিত্তিতে কাজল হেমব্রমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.