ছবিতে ধৃত গণেশ সরকার, ছবি : জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রৌঢ় প্রেমিককে ছেড়ে যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোয় খুন। প্রায় ১৪ বছরের পরকীয়া প্রেম ভেঙে একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন আকাইহাটের নিহত বিধবা রিঙ্কু দাস(৪২)। সেকারণেই প্রেমিকের হাতে তাঁকে খুন হতে হয়েছে। রিংকু দাস খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই দাবি পুলিশের। ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কাটোয়া থানার পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতের নাম গণেশ সরকার(৫৮)।
নিহতের বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মণ্ডলহাটে ধৃত গণেশের আস্তানা। ধৃতের সঙ্গে রিংকু দাসের প্রায় ১৪ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে কয়েকমাস ধরে ওই মহিলা গণেশকে এড়িয়ে একাধিক লোকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। গণেশ বিষয়টি জানতে পেরেই ক্ষোভে ফুটছিল। তাই আক্রোশের বশে রিংকু দাসকে খুন করে সে। এই খুনে আর কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতকে শুক্রবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে আট দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ঘরেই খুন হন বিধবা রিংকু দাস। মৃতের ছোট ছেলে সুমন দাস থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে কাটোয়া থানার পুলিশ মৃতের পরকীয়ার খবর পায়। রিংকুদেবীর ফোনটি দেহের পাশেই পড়েছিল। সেই ফোনের সূত্র ধরে প্রেমিক গণেশের সন্ধান পায় পুলিশ৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় দাঁইহাট মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে গণেশ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গণেশ সরকার আগে চাল কলে কাজ করতো। এখন ব্যবসা শুরু করেছে। তার বাড়িতে স্ত্রী পুত্র নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার। জেরায় গণেশ বলেছে, রিংকুদেবীর সঙ্গে তার দীর্ঘ পরকীয়ার সম্পর্ক। প্রেমের খাতিরে প্রচুর টাকাও খরচ করেছে গণেশ। রিংকুদেবী যে বাড়িতে খুন হয়েছেন, সেই বাড়ির জমি গণেশই কিনে দেয়। এমনকী, বাড়ি তৈরির টাকাও গণেশেরই দেওয়া। বিভিন্ন সময় মহিলার বাপের বাড়িতেও অর্থ সাহায্য করেছে ধৃত গণেশ সরকার। এভাবে দিনের পর দিন টাকার জোগান দিতে গিয়ে বাজারে ভাল রকম ধারদেনা হয়ে যায় গণেশের। তবে তাতেও সম্পর্কে কোনও ভাঙন ধরেনি। প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে মহিলার বাড়িতে গণেশের যাতায়াত ছিল। এটি স্থানীয়দেরও গা-সওয়া হয়ে যায়। বুধবার রাতে এসে প্রেমিকাকে খুন করে পালিয়ে যায় সে। সম্প্রতি গণেশের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে চেয়েছিলেন রিংকুদেবী। বেশ কয়েকজন যুবকরে সঙ্গে সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। এই খবর গণেশের কানে গিয়ে পৌঁছায়। সে দেখতে পায় তার প্রেমিকা নিত্যনতুন শাড়ি, দামী প্রসাধনী ব্যবহার করছে। প্রৌঢ় গণেশকে আর পাত্তা দিচ্ছে না। প্রেমিকার এই বদলে যাওয়াকেই মেনে নিতে পারেনি গণেশ। আক্রোশে ফুটতে থাকে সে। সেই আক্রোশের বশেই প্রেমিকা রিংকু দাসকে নৃশংসভাবে খুন করে।
[‘তিতলি’-র প্রভাবে বিপর্যস্ত ঝাড়গ্রাম, মৃত্যু যুবকের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.