ছবিতে মোবাইল ফিরে পেয়েছেন সজন মিঞা, ছবি: জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: কথা রাখল চোর। চার্জার সমেত নতুন মোবাইল ফোন ফিরে পেলেন মালিক। দিন তিনেক আগেই শোয়ার ঘরের ড্রেসিং টেবল থেকে উধাও হয়ে যায় সজন মিঞার নতুন স্মার্টফোন। ঘুম থেকে জেগে এই দৃশ্য দেখে কার্যত ভেঙে পড়েছিলেন ওই যুবক। তবে ফোন রাখার জায়গায় পড়েছিল চিরকুট। যা দেখে খানিকটা হলেও স্বস্তি বোধ করেছিলেন ওই যুবক। তাতে লেখা, ‘চিন্তা করবেন না। এক মাসের মধ্যেই ফোনটি ফিরিয়ে দিয়ে যাব।’ চিরকুটের নিচে ছিল ফোনের মধ্যে থাকা সিমদুটি। তবে একমাস সময় নিল না, ‘এক কথার চোর’। তিনদিনেই মোবাইল ফিরল ঘরে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার কলপুকুরপাড় এলাকায়।
রবিবার সকালে গোয়াল পরিষ্কার করতে গিয়ে সজনের মা দেখেন সযত্নে মোবাইল ও চার্জারটি সেখানে পড়ে আছে। সঙ্গেসঙ্গেই ঘুমন্ত ছেলেকে ডেকে তোলেন তিনি। নতুন মোবাইল হারিয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন ওই যুবক। ঘুমচোখে হারানিধি ফিরে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি ভাতার থানায় পৌঁছে যান। তবে মোবাইল ফেরানোর কৃতিত্ব চোরকে নয়, পুলিশকেই দিচ্ছেন ওই লটারি বিক্রেতা যুবক। তাঁর দাবি, অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ একটি ফন্দি আঁটে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের মাধ্যে এলাকায় রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল খুব শিগগির চোর ধরা পড়বে। এই মোক্ষম দাওয়াই কাজে এসেছে। ধরা পড়লে থার্ড ডিগ্রি পড়তে পারে। তাই আগেভাগেই ফোন ফিরিয়ে দিয়ে শাস্তির খাঁড়া থেকে বাঁচল চোর।
জানা গিয়েছে, ভাতার বাজারের কলপুকুরপাড়ের বাসিন্দা সজন মিঞা দু’সপ্তাহ আগে ১০ হাজার টাকায় স্মার্টফোনটি কেনেন। এদিন সেই চুরি যাওয়া মোবাইল ফিরে পেয়ে আত্মহারা তিনি। বলেন, ‘চোর চিঠি লিখে ফেরত দেওয়ার কথা বললেও বিশ্বাস করতে পারিনি এত তাড়াতাড়ি ফোনটি ফিরে পাব।’ কী করে হল এই অসাধ্য সাধন? ভাতার থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, আসলে ওই ‘শিক্ষিত’ চোর পরে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিল ফোনের আইএমইআই নম্বর ধরে তদন্ত শুরু হলে সে ধরা পড়ে যাবে। তাই ফোনটি ফেরত দিয়ে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.