ধীমান রায়, কাটোয়া: মুখে পোড়া দাগ। তা পরীক্ষার নামে নববধূকে কার্যত বিবস্ত্র করে মারধর। ঘরে ঢুকতে বাধা। গয়না ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। লজ্জার ছবি কাটোয়ার চুরপুনি গ্রামে। ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। গোটা ঘটনায় শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন নববধূ।
বছর দুয়েক আগে মিসড কলের সূত্রে কাটোয়ার চুরপুনি গ্রামের বাসিন্দা অমিত দাসের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল এক যুবতীর। ওই মহিলার বাড়ি কাটোয়ার সিন্নি গ্রামে। সম্পর্ক দ্রুত প্রেমে গড়ায়। চলতি বছরের ২ জুলাই দুজনের প্রথম দেখা হয়। মেয়েটির বাড়ির এলাকায় পুজো উপলক্ষ্যে সিন্নি গ্রামে গিয়েছিলেন অমিত। ৪ জুলাই সিন্নি গ্রামের এক মন্দিরে তিনি ওই যুবতীকে বিয়েও করেন। এরপর কোনও কারণ দেখিয়ে অমিত নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। অমিত বাড়িতে যাওয়ার পর আর যোগাযোগ না রাখায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ওই নববধূ ও তাঁর পরিবার। বাধ্য হয়ে গত শুক্রবার ওই যুবতী একাই চলে যান শ্বশুরবাড়িতে। অভিযোগ, অমিতের বাড়িতে যাওয়া মাত্র দুর্ব্যবহারের মুখে পড়েন ওই যুবতী। মুখে কালো দাগ থাকায় তাঁকে পরীক্ষার নামে চূড়ান্ত অপমানিত করা হয়। কার্যত বিবস্ত্র করে মারধর করা হয় নির্যাতিতাকে। বিয়ের জন্য জমানো ৪৫ হাজার টাকা এবং ৫ ভরি সোনা নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন ওই যুবতী। মূল্যবান সামগ্রীও তাঁর থেকে কেড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেদিন বিকেলে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় চুরপুনি গ্রামের এক মন্দিরের পাশ থেকে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করেন তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন। তাঁরাই মেয়েকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। অমিত এবং তাঁর বাড়ির লোকেদের এমন আচরণে নির্যাতিতা ভেঙে পড়েছেন। ওই যুবতীর বক্তব্য, ১০ বছর আগে জ্বলন্ত প্রদীপ তুলতে গিয়ে তাঁর শরীরের একাধিক জায়গায় পুড়ে গিয়েছিল। অমিতকে তিনি এ ঘটনা জানিয়েছিলেন। এরপরও প্রেমিকাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পেশায় কৃষক অমিত।
বিয়ের দু সপ্তাহের মধ্যে শ্বশুরবাড়ি থেকে এমন ব্যবহারে নির্যাতিতার পরিবার ক্ষুব্ধ। অমিত ও তাঁর বাড়ির কয়েকজন সদস্যর বিরুদ্ধে কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিপদ বুঝে গা ঢাকা দিয়েছে চুরমুনি গ্রামের দাস পরিবার। প্রতিবেশীর এমন কাণ্ডে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়েছে গোটা গ্রামের।
ছবি – জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.