ছবি: ফাইল
ধীমান রায়, কাটোয়া: ট্রাফিক আইন ভাঙলেই পশুদের ধরে খোঁয়ারে পাঠাচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া পুরসভা। কয়েকদিন প্রায় সাড়ে ন’টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ছয়টি গরু ধরে কাটোয়ার পুরকর্মীরা। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কাটোয়া পুর এলাকার একমাত্র খোঁয়ারে। সেই খোঁয়ারের ইজারাদার নির্মলেন্দু রায়ের হেফাজতে তুলে দেওয়া হয় গরুগুলি। নিয়মমতো মালিকরা জরিমানা দিলে তবেই ফেরত পাচ্ছেন গরু। আর এতেই দীর্ঘদিন পর মোটা টাকা আয়ের সুযোগ পাওয়ায় আনন্দিত নির্মলেন্দুবাবু।
আগে গ্রামেগঞ্জে থাকত খোঁয়ারের ব্যবস্থা। কোনও কৃষকের জমিতে কারও গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যদি গবাদি পশু ফসল নষ্ট করলে সেই গবাদিপশুকে ধরে খোঁয়ারে পাঠানো হত। গবাদি পশুর মালিককে নির্দিষ্ট জরিমানা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে হত তার পশুকে। এই ব্যবস্থা একপ্রকার উঠেই গিয়েছে বলা যায়। তবে কাটোয়া শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্মলেন্দু রায়ের বাড়িতে এখনও রয়েছে খোঁয়ার। তিনি পুরসভা থেকে ইজারা নিয়ে খোঁয়ার চালান। নির্মলেন্দুবাবু জানিয়েছেন, তার জন্য পুরসভাকে বছরের ২০০ টাকা করে দিতে হয়। নির্মলেন্দুবাবুর বাড়ির মধ্যেই রয়েছে খোঁয়ারের ব্যবস্থা। বাড়ি সঙ্গে মুদিখানা দোকান চালান। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্বামী-স্ত্রী দু’জনে থাকেন। নির্মলেন্দু রায়ের কথায়, “খোঁয়ার চালালেও প্রায় আড়াই বছর ধরে কোনও গবাদিপশু আমার খোঁয়ারে আসেনি। আড়াই বছর আগে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ ৩২ টি গরু রেখে গিয়েছিল। দৈনিক ২০ টাকা গরুপিছু ভাড়া পেয়েছিলাম। দিন দশেক ছিল। তারপর থেকে খোঁয়ারে আর গরু ছাগল কিছুই আসেনি।”
শুক্রবার পুরসভা অভিযান চালিয়ে পাঁচটি গাভী ও একটি এঁড়ে গরু ধরা হয়। সেগুলি নির্মলেন্দুবাবুর খোঁয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্মলেন্দুবাবু জানিয়েছেন, খোঁয়ারে ঢোকার পর ছাড়াতে গেলে গরুমালিককে দৈনিক ১০০ টাকা হিসাবে জরিমানা জমা দিতে হবে। তবে গরু ছাড়াতে পারবেন।” কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এখন আমরা গরুগুলি ধরে খোঁয়ারে দিচ্ছি। গরুমালিকদের সুযোগ দিচ্ছি। এরপরেও তারা যদি সতর্ক না হন
তাহলে এবার আমরা গরু ধরার পর নিলাম করে দেব। কিন্তু রাস্তায় এভাবে গরু চড়তে দেব না।” জানা গিয়েছে, ৬ টি গরুর মধ্যে এদিন সকালে এঁড়ে গরুটির মালিক কাটোয়ার কেশিয়াপাড়ার বাসিন্দা মিঠু শেখ ১০০ টাকা জরিমানা দিয়ে তার গরু ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছেন। তবে বাকি পাঁচটির মালিকের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। তাতে নির্মলেন্দুবাবুর কোনও মাথাব্যথা নেই। কারণ, গরুমালিক যত দেরি করবেন তাতে খোঁয়ার মালিকের ততই লক্ষ্মী হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.