ধীমান রায়, কাটোয়া: জীবনে কখন যে কী ঘটবে, বলা সত্যি মুশকিল! দিব্যি প্রাণোচ্ছ্বল একটি মেয়ে৷ পড়াশোনায়ও ভাল৷ হঠাৎ করে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললেন তিনি৷ পরিস্থিতি এমনই যে, ওই তরুণীর পায়ে এখন বেড়ি পরিয়ে রাখেন পরিবারের লোকেরা৷ তাঁদের দাবি, মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গিয়েছেন৷ কিন্তু, রোগ সারেনি৷ উলটে চার-চার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ তাই বাধ্য হয়ে পায়ে বেড়ি পরিয়ে রাখতে হয়৷
[সকালে রেইকি, বিকেলে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে পুলিশকর্মীর বাড়িতেই ডাকাতি]
পূর্ব বর্ধমানে কাটোয়ার শহরের বাগনেপাড়ায় থাকেন আবদুল মান্নাফ৷ পেশায় তিনি দর্জি৷ কাটোয়া স্টেশনবাজার দোকান আবদুলের৷ তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে৷ স্ত্রী প্রয়াত৷ দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে৷ এক ছেলে কর্মসূত্রে সপরিবারে থাকেন কলকাতায়৷ মেয়ে শুক্লা খাতুন নিয়ে কাটোয়ায় থাকেন আবদুল মুন্নাফ৷ তিনি জানিয়েছেন, কাটোয়া কলেজের ছাত্রী ছিলেন শুক্লা৷ ২০১৩ সালে বিএ ফাইনাল পরীক্ষার আগে আচমকাই মানসিক সমস্যা শুরু হয়৷ ফলে পরীক্ষাও ভাল হয়নি৷ পরীক্ষার পর পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন শুক্লা৷
মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে সুস্থ কর তুলতে অবশ্য চেষ্টার কসুর করেননি আবদুল৷ গত পাঁচ বছর ধরে শুক্লার চিকিৎসার জন্য জলের মতো টাকা খরচ করেছেন তিনি৷ কিন্তু, রোগ সারেনি৷ উলটে বেশ কয়েকবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন শুক্লা৷ আবদুল মুন্নাফ বলেন, ‘মানসিক ভারসাম্য হারানোর পর আমার মেয়ে চারবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। দুবার ভিনরাজ্য থেকে নিয়ে আসতে হয়েছে। শেষবার হাওড়া থেকে পরিচিত কয়েকজন হিজড়ে শুক্লাকে ধরে নিয়ে আসে। আমি কাজ করব নাকি মেয়েকে আগলে আগলে রাখবো? তাই বাধ্য হয়েই পায়ে বেড়ি পরিয়ে রাখি৷’ শুক্লা খাতুনের দুটি পায়ে লোহার রিং পড়িয়ে দিয়েছেন আবদুল৷ একটি শিকের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে রিং দুটি৷ ফলে পা টেনে খুব আস্তে আস্তে হাঁটেন ওই তরুণী৷ বেশিদূর যেতে পারেন না, কাটোয়া বাগানেপাড়ায় বাড়ির সামনেই ঘুরে বেড়ান৷ আর ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন৷
[ আগুনের গ্রাসে গিয়েছে সর্বস্ব, পথের ধারে প্রতিমা গড়ে চলেছেন বালুরঘাটের উত্তম]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.