ধীমান রায়, কাটোয়া: ঘুমিয়ে পড়ার সময় ‘শয়তান’ এসে পায়ুদ্বার দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে যায় আস্ত একটি টর্চ। কিন্তু লজ্জায় বাড়িতে কিছু বলতে পারেননি তিনি। ওই অবস্থাতেই নিজেই হাসপাতালে এসে ভরতি হন বছর চব্বিশের যুবক। অবশেষে অস্ত্রোপচার করে ওই টর্চ বের করে যুবকের প্রাণরক্ষা করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। যদিও চিকিৎকরা জানতে পেরেছেন কোনও শয়তানের কাজ নয়, কাটোয়ার গীধগ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক নিজেই তার পায়ুদ্বার দিয়ে প্রায় ১৪ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের টর্চটি ঢুকিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে অস্ত্রোপচার করার পর এখন তিনি কাটোয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই যুবক কাটোয়া থানার গীধগ্রামের বাসিন্দা। পেশায় রাজমিস্ত্রি। ভিনরাজ্যেই তিনি কাজ করতে যান। মাসতিনেক আগে বাড়ি ফেরেন। বছর দেড়েক আগে বিয়ে হয়েছে। স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধেয় একাই কাটোয়া হাসপাতালে যান ওই যুবক। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্সরা বুঝতে পারেন তাঁর ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তবে কেন কষ্ট পাচ্ছেন ওই যুবক প্রথমে তা ধরতে পারেননি চিকিৎসকরা। রোগীকে জিজ্ঞাসা করতে ইশারা করে দেখান। তারপর চিকিৎসক বিষয়টি বুঝতে পারেন। চিকিৎসক জিজ্ঞাসা করেন, “কি করে এমন হল? যুবক উত্তর দেন,” এটা শয়তানের কাজ। আমি ঘুমোচ্ছিলাম। কিছু বুঝতে পারিনি।”
এরপর চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের তোড়জোড় শুরু করে দেন। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে ওই টর্চটি বের করা হয়। শল্য চিকিৎসক তাপস সরকার বলেন, “এই অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি ছিল। তবে অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। আমার দীর্ঘ চিকিৎসক জীবনে এরকম ঘটনা আগে দেখিনি। রোগী এখন বিপন্মুক্ত।”
অস্ত্রোপচারের পর যুবক যখন কিছুটা সুস্থ হন তখন ফের তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়। সেই সময় যুবক জানান, দীর্ঘদিন ধরেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে। মানসিক হতাশায় তাই নিজেই ওই টর্চ পায়ুদ্বারে ঢুকিয়েছিলেন।
যুবকের মা জানান, শুক্রবার দুপুর নাগাদ পুত্রবধূকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। তখন ঘরে একাই ছিলেন আলাউদ্দিন। সন্ধের দিকে যুবক জানান, তাঁর পায়ুদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তাই হাসপাতালে যাবেন। এরপর গীধগ্রাম থেকে টোটো ধরেন। তারপর বাস ধরে কাটোয়ায় চলে যান। বাসস্ট্যান্ড থেকে হেঁটেই হাসপাতালে পৌঁছন। অস্ত্রোপচারের বেশ কিছুক্ষণ পর ওই যুবকের চোখেমুখে স্বস্তি। আত্মীয়দের দাবি, যুবকের প্রায় ছোট থেকেই মানসিক সমস্যা রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.