ধীমান রায়, কাটোয়া: সেই ১৯৩১ সালের কথা। ব্রিটিশদের হটাতে ঐক্যবব্ধ হয়েছিলেন বাংলার মানুষ। এমন একটা সময় কাটোয়ায় এসে নেতাজি দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন। সেই সময় তিনদিন কাটিয়ে যাওয়ার স্মৃতি এখনও ভোলেননি এলাকাবাসী। দেশনায়ক কথা দিয়েছিলেন ‘অবসরের সুযোগ পাইলে এই আশ্রমে এসে অবস্থান করিব।’ তাই আজও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অপেক্ষায় থাকে কাটোয়া শহর।
[মাত্র এক মিনিটেই নেতাজির নিখুঁত ছবি! বাংলার বিস্ময় বিশ্বনাথ]
কাটোয়া পুর এলাকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাঠগোলাপাড়ায় রয়েছে একটি পুরনো বাড়ি। যে বাড়ির একটি ঘর এখন ফরওয়ার্ড ব্লকের কাটোয়া জোনাল অফিস। জানা গিয়েছে এই দলীয় কার্যালয় তৈরি হওয়ার আগে এখানেই নেতাজির স্মৃতিতে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয়। যদিও বর্তমানে আশ্রমের আর কোনও কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে না। স্থানীয়দের কথায়, ১৯৩১ সালে কাটোয়ার বিপ্লবীদের আহ্বানে এই বাড়িতে তিনদিন কাটিয়ে গিয়েছিলেন নেতাজি। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা শিবনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, সে বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে নেতাজি কাটোয়ায় এসেছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি টানা তিন দিন ছিলেন। অধুনা কাঠগোলাপাড়া, গৌরাঙ্গপাড়া এবং কয়েকটি এলাকায় গিয়ে মানুষকে দেশাত্মবোধের পাঠ দেন। বিপ্লবীদের নিয়ে ওই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বৈঠকও করেছিলেন। যে বাড়িটিতে ছিলেন নেতাজি সেই বাড়ির মালিক ভবনটি আশ্রমকে দান করেন। পরবর্তীকালে ট্রাস্টি গঠনও করা হয়। তবে নানা সমস্যার কারণে আশ্রমের কর্মকাণ্ডে ভাঁটা পড়ে যায়।
[জন্মদিনে দেশের বীর সন্তানকে স্মরণ মোদি-কোবিন্দ-মমতার]
বিখ্যাত ওই বাড়ির বাইরে একটি ফলক উল্লেখ রয়েছে। যেখানে লেখা রয়েছে, নেতাজি কথা দিয়ে গিয়েছেন ‘অবসরে সুযোগ পাইলে এই জায়গায় এসে অবস্থান করিব’। কাটোয়াবাসীর বিশ্বাস নেতাজি কথা রাখবেনই। ২৩ জানুয়ারি এলে সেই আশার প্রদীপ আবার জ্বলে ওঠে। তবে কাঠগোলাপাড়ার এই ঐতিহাসিক বাড়ি নতুন প্রজন্মের কাছে অচেনা। প্রবীণদের আক্ষেপ ছোটদের সেভাবে বোঝানো গেল না। তারা জানল না কাটোয়ার মাটিতে কার পা পড়েছিল। এই হা-হুতাশ নিয়ে আরও একটা নেতাজি জয়ন্তী।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.