ধীমান রায়, কাটোয়া: স্কুল ব্যাগে লুকানো থাকত ইনজেকশনের সূচ। সুযোগ পেলেই জুনিয়রদের কারও কারও শরীরে তা ফুঁটিয়ে দিত কয়েকজন সিনিয়র। এভাবেই স্কুলে প্রায় প্রত্যেকদিন র্যাগিংয়ের শিকার হত পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্ররা। মুখ বুজে তারা স্কুলের অষ্টম ও নবম শ্রেণির সিনিয়রদের এই নিপীড়ন সহ্য করে গিয়েছে। শেষে গুরুতর অসু্স্থ হয়ে এক ছাত্র বুধবার রাতে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি হলে প্রকাশ্যে আসে সিনিয়রদের কীর্তি। অসুস্থ ছাত্রের মুখে স্কুলে র্যাগিংয়ের কথা শুনে কার্যত তাজ্জব বনে গিয়েছেন চিকিৎসক। নিজের ফেসবুকে ছাত্রের জবানবন্দি পোস্ট করে দেন ওই চিকিৎসক৷ যা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল৷
[এবার এসএমএসে বজ্রপাতের আগাম খবর নবান্ন থেকে জেলায়]
সমস্ত ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়চড়ে বসেছে পুলিশ-প্রশাসন। কাটোয়ার কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের এই র্যাগিংয়ের ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতিত ছাত্র ও তাদের অভিভাবকদের নিয়ে স্কুলে তদন্তে যায় কাটোয়া থানার পুলিশ। ঘটনার যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গ্রামীণ) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়৷ সূত্রের খবর, ঘটনায় ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন অভিযুক্তের নাম পুলিশের হাতে এসেছে৷ ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পিন্টু সিংহ বলেন, ”আমরা কয়েকজনের নাম পেয়েছি। তাদের অভিভাবকদের ডাকা হবে। স্কুলে বৈঠক করা হবে। আর যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে নজর থাকবে। তারপরেও যদি ওই অভিযুক্ত ছাত্ররা নিজেদের সংশোধন না করে তাহলে পুলিশকে জানাব৷”
[এক কোপেই বাজিমাত, ১৩ বছর বয়স থেকেই বলি দিতে ওস্তাদ শান্তি কসাই]
জানা গিয়েছে, কাটোয়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, পেশায় পুরসভার অস্থায়ী কর্মী অখিল হালদারের ছেলে ভক্ত হালদার কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। অখিলবাবু বলেন, ”বুধবার সন্ধ্যায় আমি বাড়ি ফেরার পর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ দেখি ছেলে যন্ত্রণার কান্নাকাটি করছে। তাকে জিজ্ঞাসা করতে সে জানায় স্কুলেরই কয়েকজন ছাত্র তাকে জোর করে ইনজেকশনের সূচ ফুঁটিয়ে দিয়েছে। দেখি ছেলের পা ফুলে গিয়েছে। ওকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাই।” হাসপাতাল সূত্রে খবর, অখিলবাবু তাঁর ছেলেকে নিয়ে যখন হাসপাতালে যান, তখন জরুরী বিভাগে ডিউটি করছিলেন চিকিৎসক প্রদীপ কর। তিনি অসুস্থ ছাত্রের মুখ থেকে সব ঘটনা শোনেন এবং তাঁর জবানবন্দির ভিডিও ফেসবুকে পোষ্ট করে দেন৷ তারপরেই ভাইরাল হয়ে যায় ওই ভিডিও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.