গৌতম ব্রহ্ম: বিপজ্জনকভাবে কপিল মুনির আশ্রমের দিকে এগিয়ে আসছে সাগর। গতবার মেলার সময় যা ছিল তার থেকে প্রায় ২০০ মিটার এগিয়ে এসেছে। সেই অগ্রগতি ঠেকাতে পাঁচ ফুটের শালবললি, জিও ব্যাগ, ইট, বালি দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। রবিবার পুলক রায়, পার্থ ভৌমিক এসেছিলেন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সাগর পাড়ে বাঁধ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় ঠিকাদারের কর্মী মানিক খাঁড়া জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে এখানেই পড়ে আছেন। তিনি আরও জানান, সাগর যেভাবে এগোচ্ছে তাতে সমূহ বিপদ। একটা কপিল মুনির আশ্রম তলিয়ে গিয়েছে। আরও একটা তলিয়ে যাবে। কপিল মুনির আশ্রমের সামনের ২ নম্বর ঘাটের সামনে ফুচকা বিক্রি করেন সুকেশ মণ্ডল। ৪৬ বছর বয়স। কালি বাজারে বাড়ি। ছোটবেলায় কপিল মুনির আশ্রম থেকে ১ ঘণ্টা হেঁটে সাগরের জলে পা ডোবাতে হত। এখন ২ মিনিট হেঁটেই সমুদ্রে পৌঁছনো যায়। জানান, উত্তুরে হাওয়ার দাপটে দিঘার মতো জলোচ্ছ্বাস। বর্ষার সময় পূবালী হাওয়া দিলে এই ঢেউ আরও বড় হবে। সাগরের এই আগ্রাসী চেহারা দেখে মানুষ আতঙ্কে।
৩০ কিমি বাই ১১ কিমি আয়তনের সাগরদ্বীপ কিন্তু এখন একটু একটু করে ছোট হয়ে যাচ্ছে। চার নম্বর ঘাটের কাছে রুপা মণ্ডলের চায়ের দোকান। সেখানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে স্থানীয় উত্তর হারাধনপুরের ঝরু জানা জানালেন, “আমার এখন ৫৫ বছর বয়স। ছোট থেকে কপিল মুনির আশ্রম দেখছি। সাগর ক্রমশ এগিয়ে আসছে। ২ বছর ২০০ মিটার এগিয়ে এসেছে। সামনে ভরা কোটাল। ওই সময় ঢেউয়ের দাপট আরও বাড়বে।”
একই বক্তব্য রুপা মণ্ডলেরও। ১৫ বছর চায়ের দোকান চালাচ্ছেন। তিনিও জানালেন আতঙ্কের কথা। বললেন, “যেভাবে ঢেউ পাড়ে এসে ধাক্কা দিতে দিচ্ছে বুক কেপে উঠছে। সত্যি, বাঁধে এত জোরে ঢেউ আছড়ে পড়ছে যে প্রবল জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে।” যদিও ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী তৎপর। তাঁরা জেমিনি ক্রাফট নিয়ে টহল দিচ্ছেন। সঙ্গে রয়েছেন ৬ জন ডুবুরি। রয়েছে হোভারক্রাফট। আকাশপথে টহলদারি চলছে। ২ নম্বর ঘাটের কাছে খতরা, বিপদ লেখা মার্কার দেওয়া হয়েছে। পুণ্যার্থীরা স্বীকার করে নিয়েছেন, সাগরের এই রূপ তাঁরা আগে দেখেননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.