শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: করোনার (Coronavirus) কারণে চলতি বছরে কোনওরকমে পুজো সারবে বলেই স্থির করেছে অধিকাংশ কমিটি। বনেদিবাড়ির পুজোতেও কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু উলটো ছবি মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ধুলিয়ানের কাঞ্চনতলা জমিদার বাড়িতে। করোনা কালেও প্রতিবারের মতো করেই মা দূর্গার আরাধনা হবে সেখানে। সকলের জন্যই খোলা থাকবে জমিদার বাড়ির দ্বার।
ধুলিয়ান কাঞ্চনতলা জমিদার বাড়িজুড়ে এখন পুজোর আমেজ। হাতে মাত্র বাকি কয়েকটা দিন। তাই জোরকদমে চলছে রংয়ের কাজ। জানা গিয়েছে, অন্যান্যবারের মতোই এবারও পুজো (Durga Puja 2020) হবে সেখানে। পুজোর দিনগুলিতে সকলের জন্য খোলা থাকবে কাঞ্চনতলা জমিদার বাড়ির দরজা। তবে কঠোরভাবে পালন করা হবে স্বাস্থ্যবিধি। পুজোর ডালায় দেওয়া যাবে না কাটা ফল। যতটা সম্ভব সামজিক দুরত্ব বজায় রেখে দেওয়া হবে অঞ্জলি। ওই পরিবারের সদস্য সুদীপ রায়ের অনুরোধ, সকলে যেন মাস্ক পরে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করেন। নবমী পর্যন্ত এভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব হলেও বিসর্জনে কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তর নেই সুদীপবাবুর কাছেও। কারণ, বিসর্জনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান তিনিও।
বহু উত্থানপতনের মধ্যে দিয়ে কাঞ্চনতলা জমিদার রাঘবেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়ির দুর্গাপুজো চলতি বছরে ৩০০ তম বর্ষ অতিক্রম করতে চলেছে। কালের নিয়মে অনেক কিছুই বিলিন হয়ে গিয়েছে। নেই পালকি চড়ে মহিলাদের গঙ্গার ঘাটে স্নান করতে যাওয়ার নিয়ম। পুজোর দিন আর আগের মতো বসে না আর সানাইয়ের আসর। আজ আর হাতি, ঘোড়া নিয়ে বেরোয় না প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাএা। জমিদারি হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে গিয়েছে পুজোর আগের সেই জৌলুষ। তবে আগের মতোই নিষ্ঠার সঙ্গে আজও দেবী পূজিতা হন ওই জমিদার পরিবারে।
রায় পরিবারের দুর্গা বাইশ পুতুলের পুজো বলেই খ্যাত এলাকায়। রথের দিন ধর্মীয় রীতি মেনে বাইশ পুতুলের কাঠামোয় মাটির প্রলেপ দিয়ে শুরু হয় মূর্তি গড়ার কাজ। মহালয়ার আগে হয় দেবীর বোধন। দশমীর দিন বন্ধ বাড়ির মূল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সপ্তমী ও অষ্টমীতে একটা করে ছাগল বলি হয়। নবমীতে পাঁচটা ছাগল বলি দেওয়া হয়। প্রথম বলি উৎসর্গ করা হয় মা গঙ্গাকে। দশমীর দিন বাড়িতে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মহিলারা দেবীকে বরণ করেন। পুরুষরা ঢাক বাজান। চলে সিঁদুর খেলা। দেবীকে কাঁধে করে ঢাক-ঢোল কাঁসর বাদ্য সহকারে শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয় ধুলিয়ান সদর ঘাটে। সন্ধেয় গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.